বাঙালি ঐতিহ্যের বাহক হয়েই এদিন তৃণমূলের সাংসদ হিসেবে রাজ্যসভায় শপথ গ্রহণ করলেন প্রাক্তন আইএএস জহর সরকার। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাজ্যসভায় নির্বাচিত হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন জহর সরকার। দীনেশ ত্রিবেদীর ছেড়ে যাওয়া আসনে সাংসদ হিসেবে শপথ নিলেন তিনি। বুধবার তিনি অধিবেশনের শুরুতে শপথ গ্রহণ করেন। তিনি শপথবাক্য পাঠ করেন বাংলাতেই। ধুতি-পাঞ্জাবিতে একেবারে বাঙালি সাজেই তিনি এদিন সংসদের উচ্চকক্ষে যান।
প্রসারভারতীর সিইও থাকাকালীন মূলত মোদি সরকারের সঙ্গে জহর সরকারের গোলমাল চরমে উঠেছিল। তার পরও তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে মোদী সরকারের বিভিন্ন নীতির সমালোচনা করেছেন। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়ে বিতর্কের সময় মোদী-শাহ জুটিকে তুলোধোনা করেছেন। রাজ্য সরকারের পক্ষে কথা বলেন। একটা সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে তৈরি হওয়া বহু ব্যঙ্গচিত্রও তাঁকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে দেখা গিয়েছে। এহেন মোদী বিরোধী প্রাক্তন আমলাকে রাজ্যসভায় পাঠিয়ে তৃণমূল স্পষ্ট বার্তা পাঠিয়েছে বাকি বিরোধী দলগুলিকেও।
এদিকে তাঁর শপথ গ্রহণের দিনই তুমুল হট্টগোল বাঁধে রাজ্য সভায়। তিনি শপথ গ্রহণ করতেই তৃণমূল কংগ্রেসের বেঞ্চ থেকে সাংসদরা 'জয় বাংলা' স্লোগান তোলেন। এরপর পেগাসাস ইস্যুতে তৃণমূল সহ বিরোধী বিধায়করা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাল সভা মুলতুবি ঘোষণা করে দেন চেয়ারম্যান তথা উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু। সাসপেন্ড করা ছয় তৃণমূল সাংসদকে।
জহর সরকার যে আসনে রাজ্যসভার সাংসদ হলেন, তা ছিল দীনেশ ত্রিবেদীর। তাঁর ছেড়ে যাওয়া এই আসনে কাকে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করবে, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জল্পনা চলছিল। কারণ, ভোটের আগে বিজেপি থেকে তৃণমূলে আসেন যশবন্ত সিনহা, ভোটের পরে যোগ দেন মুকুল রায়। তাঁদের নাম আলোচনায় ছিল। তাছাড়া ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের নামও শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু এই জল্পনায় কোথাও প্রাক্তন আমলা জহর সরকারের নাম শোনা যায়নি। তবে সেই জহর সরকারকেই রাজ্যসভায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন তৃণমূল নেত্রী মমতা।