আবারও খবরে সালিশি সভা। তবে এবার মারধর বা অত্যাচার নয়। একটি ধর্ষণের ঘটনায় পঞ্চায়েতের ভূমিকা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। নির্যাতিতার পাশে দাঁড়ানো এবং অভিযুক্তকে কঠোর শাস্তি দেওয়ার পরিবর্তে পঞ্চায়েত অভিযুক্তকে সবার সামনে ৫ বার জুতো মারা এবং কিছু আর্থিক জরিমানার পর ছেড়ে দিল। ঘটনাটি ঘটেছে যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশের আগ্রার শাহগঞ্জে। ধর্ষণের মতো একটি গুরুতর মামলার ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতের এমন সিদ্ধান্তে হতবাক সকলেই।
আরও পড়ুন: সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে সেনাকর্মীর স্ত্রীকে ধর্ষণ, ধৃত TMC উপ প্রধানের ছেলে
পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্তের সামনে নির্যাতিতার পরিবারও অসহায় হয়ে পড়েছিল। বাধ্য হয়ে তারা সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিলেন। সকলের সামনে নিয়ে নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা অভিযুক্তকে জুতো মারেন। সেই ভিডিয়ো দ্রুত সোশ্যাল মাধ্যমে ভাইরাল হয়। জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৫ জুলাই। তথ্য অনুযায়ী, একই সম্প্রদায়ের এক যুবক ওই তরুণীকে ভুল বুঝিয়ে নিজের সঙ্গে নিয়ে যায়। প্রথমে নির্যাতিতার পরিবার পুলিশে অভিযোগ করতে চেয়েছিল। কিন্তু, এক ব্যক্তি হস্তক্ষেপ করেন। পরিবারের সম্মানের বিষয় বলে পুলিশকে হস্তক্ষেপ না করার জন্য আর্জি জানান।
এদিকে, রাত ৯ টার দিকে নির্যাতিতার পরিবার পুলিশের কাছে গিয়ে এক যুবকের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ তদন্ত করতে গ্রামে পৌঁছয়। কিন্তু, গ্রামের কিছু মানুষজন জানান তারা নিজেরাই মেয়েটিকে উদ্ধার করে ফিরিয়ে আনবে। শেষ পর্যন্ত তারা ওই তরুণীকে উদ্ধার করে। তরুণীর অভিযোগ, ঠান্ডা পানীয়তে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে ওই যুবক তাকে ধর্ষণ করে। ঘটনার পরেই পঞ্চায়েতের তরফে সালিশি সভার আয়োজন করা হয়।
নির্যাতিতার পরিবার পঞ্চায়েতের কাছে ধর্ষণের কথা বললে সদস্যরা যা নির্দেশ দেন যা শুনে সবাই অবাক। যুবককে ৫ বার জুতো দিয়ে মারধর করার সাজা দেয় পঞ্চায়েত। এছাড়াও ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করে। এমন ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। এছাড়াও পুলিশও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ।
অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ সুপার মায়াঙ্ক তিওয়ারি জানিয়েছেন, অভিযোগ পাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর মেয়েটি ফিরে এসেছে। পরিবার কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ার আর্জি জানিয়েছিল। পঞ্চায়েত সম্পর্কে পুলিশের কাছে কোনও তথ্য নেই। সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিয়ো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।