রাতের আকাশ ঝলসে দিয়ে মাটিতে নেমে এল চোখ-ধাঁধানো আগুনের গোলা। আতসবাজি নয়, সম্প্রতি সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ছে উল্কাপাতের এমনই অবাক করা দৃশ্য।
সদর দরজায় বসানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে প্রথমে চমকে উঠেছিলেন ইংল্যান্ডের ছোট শহর ডার্বির বাসিন্দা গ্যারি রজার্স (৫২)। ভিডিয়ো ফুটেজে তিনি দেখতে পান, রাতের অন্ধকার চিরে আকাশ থেকে নেমে এল অতি উজ্জ্বল এক অগ্নিবলয়। কিন্তু তার সঙ্গে কোনও শব্দ না পাওয়ায় তাঁর সন্দেহ হয়। পরে আর একবার ভিডিয়ো দেখে তিনি বুঝতে পারেন, মহাকাশ থেকে পৃথিবীর বুকে খসে পড়া উল্কাখণ্ডের ছবিই তাঁর ডোরবেলে বসানো ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।
রজার্স জানিয়েছেন, ‘বিছানায় সবে শুয়েছি, হঠাত্ মোবাইল ফোনে সতর্কতামূলক ঘণ্টি বেজে উঠল। সদর দরজায় বসানো সিসি ফুটেজ দেখে চমকে উঠলাম। প্রথমে ভাবলাম আতসবাজি। কিন্তু তারপরে কোনও আওয়াজ না শোনায় বুঝতে পারলাম এক অতিবিরল দৃশ্য ধরা পড়েছে দরজার ক্যামেরায়।’
উত্তেজিত রজার্স আরও বলেন, ‘এর আগে আকাশে তারা খসতে দেখেছি। কিন্তু নিজে চোখে কখনও উল্কাপাত দেখিনি। তার আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছিল গোটা দিগন্ত। আলোকপিণ্ডের গতিপথ দেখে নিশ্চিত হয়েছি, ওটা উল্কাই ছিল। অসাধারণ সুন্দর এক দৃশ্যের সাক্ষী থাকলাম। ছেলে ইউয়ানকে ডেকে ফুটেজ দেখালাম। ও তো হতবাক!’
শেরউড পর্যবেক্ষণাগারের চেয়ারম্যান রব ডস জানিয়েছেন, ‘এমন উজ্জবল সুন্দর উল্কাপাতের দৃশ্য দেখতে পাওয়া সত্যিই সৌভাগ্যের বিষয়। কিন্তু শুনলে অবাক হবেন, প্রতি মুহূর্তে কত অজস্র এমন উল্কাখণ্ড বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে। বছরভর এই ঘটনা ঘটে চলে।’
সাধারণত এই সমস্ত উল্কাখণ্ড বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পরে বিস্ফোরণ ঘটার ফলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। কিন্তু কয়েকটি উল্কাপিণ্ড তার পরেও টিকে থাকে এবং জ্বলন্ত অবস্থায় পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ে।
অতীতে এমন বহু মহাজাগতিক বস্তুর সঙ্গে সংঘাতের ফলে পৃথিবীতে বড়সড় ক্ষতি হয়েছে। অনেক সময় একসঙ্গে একাধিক উল্কাখণ্ড বর্ষণও অস্বাভাবিক নয়। বিজ্ঞানীদের মতে, এমনই ভয়ংকর উল্কাবৃষ্টির ফলে মুছে গিয়েছে আক্কাডিয়ান সভ্যতার মতো প্রাচীন জনপদ।