গ্রামবাসীদের জুতোর মালা পরে ভরা রাস্তায় হাঁটতে হয়েছে মহিলাকে। ঝাড়খণ্ডের একটি পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমের (পিডিএস) দায়িত্বে ছিলেন তিনি। কয়েক মাস ধরেই নাকি, কথা মতো রেশন সরবরাহ করছিলেন না। ফলবশত শেষমেশ ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন বাসিন্দারা, ওই মহিলাকে চপ্পলের মালা পরিয়ে গ্রামের মধ্য দিয়ে হাঁটিয়েছেন তাঁরা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, রেশন থাকা সত্ত্বেও নাকি ওই মহিলা গ্রামবাসীদের দেননি।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ওই মহিলা চার মাস ধরে ঠিকমতো রেশন বিতরণ করেননি। জানা গিয়েছে, বহু মাস ধরে মানুষের রেশন বকেয়া ছিল, গ্রামবাসীর আঙুলের ছাপ নিয়ে স্লিপ বের করা হয়েছে কিন্তু রেশন দেওয়া হয় নি। অনেক সুবিধাভোগীর কাছেই আগের রেশনের বকেয়া চার বা পাঁচটি স্লিপ ছিল। এমনকি সোমবারও যখন গ্রাহকদের কাছ থেকে স্লিপ নেওয়া হচ্ছিল, তখনও সুবিধাভোগীরা গত মাসের রেশন দেওয়ার দাবি করেছিলেন। কিন্তু সুমরী মহারানী এবারও তা প্রত্যাখ্যান করলে, স্বাভাবিকভাবেই ক্ষিপ্র হয়ে উঠেছিলেন গ্রামবাসীরা।
ঘটনাটি ঘটেছে, দুমকা জেলার গোপীকান্দার ব্লকের রেশন ডিলার সুমরী মহারানির সঙ্গে। সুমরী মহারানি ওডমো পঞ্চায়েতের কেতোপোকা, তালখোদা, মধুবন এবং ধোবাচাপার গ্রামের সুবিধাভোগীদের খাদ্যশস্য বিতরণ করেন। অনেক গ্রামবাসী ছয় কিলোমিটার দূর থেকে হেঁটে আসেন রেশন নিতে। এ অবস্থায় তাঁদের খালি হাতে ফিরতে হয়।এবার তাই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে, চপ্পলের মালা পরিয়ে তাঁকে মধুবন গ্রাম থেকে দুর্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রেশন না পেয়ে গ্রামবাসীরা এদিন রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভেও শামিল হয়েছিলেন। অবস্থার অবগতি দেখে, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে এসে, গ্রামবাসীদের সময়মতো রেশন পাওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। এরপরেই বিক্ষোভ বন্ধ করেছিলেন স্থানীয়রা।
রেশন নিয়ে কালোবাজারির অভিযোগ
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, রেশন নিয়ে কালোবাজারি চলছে এবং সেই কারণেই তাঁরা রেশন পাচ্ছেন না। স্থানীয় ব্ল্যাক মার্কেটিং অফিসার (বিডিও) গৌতম মোদি বলেছেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে যে ডিলার মে মাসে মাত্র ৬০ শতাংশ এবং জুন মাসে ৭ শতাংশ খাদ্যশস্য বিতরণ করেছিলেন। জেলা সরবরাহ আধিকারিক বিশাল কুমার বলেছেন যে তিনি ২৫ জুনের মধ্যে সমস্ত রেশন বিতরণ সেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন বিডিয়ো-দের।
এর আগেও একই অভিযোগ উঠেছিল
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, এই প্রথম নয়, এর আগেও এই রেশন ডিলার মহিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। বিডিয়ো তদন্তের আশ্বাস দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রোববার তাঁর বাড়িতে বিতরণের জন্য চাল থাকলেও পরদিন লোকজন রেশন সংগ্রহ করতে এসে দেখেছিলেন যে সেখানে চাল ছিল না।