বড়দিন উপলক্ষে বিশ্ববাসীকে বার্তা দিতে গিয়ে 'ক্ষমতালোভীদের' তোপ দাগলেন পোপ ফ্রান্সিস। ক্রিসমাস ইভে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় ৭০০০ ভক্তের উপস্থিতিতে ‘মাস’-এ অংশগ্রহণ করেন পোপ। সেখানেই জিশুর জীবনকাহিনী তুলে ধরে বিশ্ববাসীকে বার্তা দেন পোপ ফ্রান্সিস। তিনি বলেন, 'পৃথিবীতে নারী-পুরুষ সম্পদ ও ক্ষমতার খিদেতে প্রতিবেশী, এমনকী নিজেদের ভাই-বোনদেরও গ্রাস করে নিচ্ছে।' হতাশার সুরে পোপ আরও বলেন, 'আমরা কত যুদ্ধ দেখেছি! আর কত জায়গায় আজও মানুষের মর্যাদা ও স্বাধীনতাকে অবজ্ঞা করা হয়!' অবশ্য এদিন সরাসরি ইউক্রেন যুদ্ধের উল্লেখ করেননি পোপ। তবে কয়েকদিন আগেই প্রার্থনা সভায় ইউক্রেনের প্রসঙ্গ উঠতেই ফুঁপিয়ে উঠেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। পোপ ফ্রান্সিসের আবেগঘন এই মুহূর্তের ছবি ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
পোপ ফ্রান্সিসের কথায়, 'মানুষের লোভের শিকার হচ্ছেন দুর্বল শ্রেণি। অর্থ, ক্ষমতা এবং আনন্দের জন্য বিভীষিকাময় এই পৃথিবী অনেক অজাত, দরিদ্র এবং শিশুদের জন্য জায়গা করে দেয় না।' বিশ্ববাসীর উদ্দেশে পোপের বার্তা, 'ভয় বা নিরুৎসাহের দ্বারা নিজেকে পরাস্ত হতে দেবেন না। অর্থ এবং ক্ষমতা নয়, জীবনের প্রকৃত সম্পদ খুঁজে পাওয়া যায় সম্পর্কের মধ্যে।' পোপ ফ্রান্সিস আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, 'আজকের দিনের অর্থই ভুলে যেতে পারে সবাই'। তিনি সবাইকে আর্জি জানান, 'এই বড়দিন একটি ভালো কাজ করুন।' তিনি বলেন, 'যিশু গরিব ঘরে জন্মেছিলেন, দরিদ্র হিসেবেই জীবনযাপন করেছিলেন এবং আমাদের স্বার্থে দরিদ্রতায় মৃত্যুবরণ করেছিলেন।'
এদিন ৮৬ বছর বয়সি পোপ ফ্রান্সিসকে হুইল চেয়ারে করে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় নিয়ে আসা হয়। ‘মাস’ শেষ হলে ব্যাসিলিকায় অবস্থিত ছোট্ট যিশুর মূর্তির সামনে নিয়ে যাওয়া হয় পোপকে। তখন সেখানে অনেক শিশু উপস্থিত ছিল। উল্লেখ্য, ক্যাথলিক মতে মধ্যরাতে ‘মাস’ অনুষ্ঠিত করার কথা থাকলেও পোপের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে বিগত কয়েক বছর ধরে ২৪ ডিসেম্বরের সন্ধ্যায় মাস অনুষ্ঠিত হচ্ছে। হাঁটুর ব্যথার কারণে হুইল চেয়ার বা ছড়ির সাহায্যে নড়াচড়া করতে হয় পোপকে।