মুরলী কৃষ্ণন
হিন্দু মতে বিয়ে করে শাঁখা-সিঁদুর না পরলে এটা ধরে নিতে হবে নিজের বিবাহিত স্ট্যাটাস মানে না সেই মহিলা। ২০২০ সালে দাঁড়িয়ে এই কথা বলল গৌহাটি হাইকোর্ট। একজন লোককে ডিভোর্সের আবেদন করার অনুমতি দিয়ে এই কথা বলে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
প্রধান বিচারপতি অজয় লাম্বা ও বিচারপতি সৌমিত্র সইকিয়ার ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে যে একেবারে যদি কেউ শাঁখা ও সিঁদুর পরতে মানা করে দেয়, তার মানে হল যে সেই মহিলা তাঁর স্বামীর সঙ্গে বিবাহিত থাকতে চান না।
সেই অবস্থায় কোনও ব্যক্তিকে জোর করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে রাখা কার্যত হেনস্থার স্বরূপ বলে জানিয়েছে আদালত। এই মাসের ১৯ তারিখ এই মামলায় অর্ডার দেয় আদালত।
এর আগে ফ্যামিলি কোর্ট আবেদনকারীকে ডিভোর্স দেয় নি এই বলে যে তাঁর স্ত্রী কোনও হেনস্থা করেনি তাঁকে। হাই কোর্ট বলে যে ভদ্রলোক নিম্ম আদালতে বলেছে যে তাঁর স্ত্রী শাঁখা-সিঁদুর পরতে চায় না। সেই কথা অস্বীকারও করেনি তাঁর স্ত্রী।
এই বিষয়টি মামলা চালানোর ক্ষেত্রে এভিডেন্স মেটেরিয়াল বলে মনে করে আদালত। আদালত বলেছে যে হিন্দু মতে বিয়ের ক্ষেত্রে শাঁখা ও সিঁদুর না পরা মানে এটা বোঝায় যে মহিলা দেখাতে চান যে তিনি অবিবাহিত বা আবেদনকরীর সঙ্গে বিয়ের কথা স্বীকার করতে চান না।
২০১২ সালে বিয়ে হয় এই দম্পতি। স্বামীর অভিযোগ, এক মাস একসঙ্গের থাকার পরেই মহিলা দাবি করেন যে আত্মীয়রা যেখানে আছে, তিনি সেখানে থাকবেন না। অন্য বাড়ি নিয়ে চলে যেতে বলেন তাঁর স্বামীকে। এই নিয়ে শুরু ঝামেলা। নিঃসন্তান থাকার জন্যেও স্বামীকে দোষ দেন এই মহিলা।
২০১৩ সালে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে যান মহিলা ও স্বামী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে আইপিসি-র ৪৯৮-এ ধারায় মামলা দায়ের করেন। কিন্তু এই মামলায় বেকসুর খালাস পেয়ে যায় ভদ্রলোক ও তার পরিবার। এরপরই হেনস্থার অভিযোগ করে ডিভোর্সের মামলা করেন এই ভদ্রলোক।
মহিলা দাবি করেন যে তাঁর ওপর পণের জন্য চাপ আসত। তাঁকে খেতে দেওয়া হত না ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস দেওয়া হত না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ফ্য়ামিলি কোর্টে আবেদনকারীর পিটিশন খারিজ করে দেয়। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত বদলে দিল গৌহাটি হাইকোর্ট।