পাকা অভিনেত্রীরা যেমন এক চরিত্র থেকে অন্য চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে নিজেদের অন-স্ক্রিন ভোল বদলে ফেলেন, অফ-স্ক্রিনে তেমনই কীর্তি দেখাচ্ছেন কন্নড় অভিনেত্রী রানিয়া রাও! সোনাপাচার কাণ্ডে এর আগে - গত সপ্তাহেই তিনি নিজের অপরাধ কবুল করেছিলেন বলে শোনা গিয়েছিল। কিন্তু, সেই অবস্থান থেকে আবারও পালটি খেয়েছেন তিনি!
ইন্ডিয়া টুডে- তে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে - রানিয়া এখন দাবি করছেন, তাঁর সঙ্গে সোনা পাচারের কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ। এই মর্মে ডিআরআই-এর অ্য়াডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেলের কাছে তিনি একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন বলে সূত্রের তরফে দাবি করা হচ্ছে।
এখানেই শেষ নয়। ডিআরআই (ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স) আধিকারিকদের বিরুদ্ধে হেনস্থা ও মারধরের অভিযোগও তুলেছেন তিনি! রানিয়ার পাঠানো সংশ্লিষ্ট চিঠিতে নাকি দাবি করা হয়েছে, দু'সপ্তাহ আগে তাঁকে বিমানের ভিতর থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছিল।
রানিয়া রাওয়ের অভিযোগ, এরপর তাঁকে বারবার নিগ্রহ ও হেনস্থা করা হয় এবং ডিআইআর আধিকারিকদের লিখে দেওয়া একটি বয়ানে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু, সমস্ত নিগ্রহ সহ্য করেও তিনি সেই তৈরি করা বয়ানে স্বাক্ষর করেননি।
আবার, রানিয়া এও বলছেন যে তাঁর উপর সেই সময় প্রবল চাপ তৈরি করা হয়েছিল। এবং সেই চাপের মুখ তিনি একটা সময় নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিলেন এবং প্রায় ৫০ থেকে ৬০ ধরনের কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এছাড়া, প্রায় ৪০টি সাদা পৃষ্ঠাতেও তিনি সই করেছিলেন বলে দাবি করেছেন রানিয়া। প্রসঙ্গত, যে চিঠি নিয়ে এত কথা বলা হচ্ছে, হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা সেই চিঠির সত্যাসত্য যাচাই করেনি।
রিপোর্ট অনুসারে রানিয়া বলেছেন, 'ঠিক যে সময় আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তখন থেকে আদালতে পেশ করার আগে পর্যন্ত আমার উপর শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। আমাকে ১০ থেকে ১৫ বার থাপ্পড় মেরেছেন আধিকারিকরা। সেই আধিকারিকদের আমি দেখলে চিনতেও পারব। বারবার এত অত্যাচার সহ্য করেও আমি তাঁদের তৈরি করে দেওয়া বয়ানে স্বাক্ষর করিনি।'
রানিয়া আরও দাবি করেন, 'প্রবল চাপ ও শারীরিক নিগ্রহের কারণেই আমি প্রায় ৫০ থেকে ৬০ ধরনের কাগজে সই করতে বাধ্য হয়েছি। ডিআরআই অফিসারদের দেওয়া প্রায় ৪০টি সাদা কাগজেও স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়েছে আমাকে।'
প্রসঙ্গত, গত ৩ মার্চ (২০২৫) বেঙ্গালুরুর বিমানবন্দর থেকে রানিয়া রাওকে গ্রেফতার করেছিল ডিআরআই। তাঁর বিরুদ্ধে ১৪ কেজিরও বেশি সোনা পাচারের অভিযোগ রয়েছে। সেই সোনা তিনি বেআইনিভাবে, লুকিয়ে দুবাই থেকে ভারতে নিয়ে আসেন বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
পেশাদার অভিনেত্রী রানিয়া রাও প্রবীণ আইপিএস আধিকারিক রামচন্দ্র রাওয়ের সৎ মেয়ে। বর্তমানে কর্ণাটক রাজ্য পুলিশের আবাসন ও পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগম লিমিটেডের চেয়ারম্য়াান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পদে রয়েছেন রামচন্দ্র রাও।