আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালিবান সরকারের এক কার্যনির্বাহী মন্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, বুধবার কাবুলে একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তাতেই নাকি প্রাণ যায় ওই মন্ত্রী-সহ মোট সাতজনের।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের তরফে যে দাবি করা হচ্ছে, সেই অনুসারে - নিহত ওই তালিব কার্যনির্বাহী মন্ত্রীর নাম - খইলাল উর-রহমান হাক্কানি। তিনি তালিবান সরকারের শরণার্থী বিষয় মন্ত্রকের কার্যনির্বাহী মন্ত্রী ছিলেন।
রয়টার্সের তরফে আরও দাবি করা হয়েছে, এ নিয়ে তালিবান সরকারের তরফে বিবৃতি দিয়েছেন তাদের এক মুখপাত্র। তিনি জানিয়েছেন, ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গি গোষ্ঠীর হামলায় মৃত্যু হয়েছে খইলাল হাক্কানির। যদিও এখনও পর্যন্ত আইএস-এর তরফে অন্তত এই ধরনের কোনও হামলার দায় স্বীকার করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে মার্কিন সেনাবাহিনী আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাওয়ার পরই ফের সেখানে দখলদারির রাজত্ব কায়েম করে তালিবান জঙ্গিরা। ভারত-সহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশের সমর্থন আদায় না করতে পারলেও নিজেদের মতো করেই একটা সরকার তৈরি করেছে তালিবানরা। যা আদতে একটি অন্তর্বর্তী সরকারের সমতুল্য বলে ব্যাখ্য়া করেন অনেকে।
সেই অন্তর্বর্তী সরকারেরই মন্ত্রী ছিলেন ছিলেন এই খইলাল হাক্কানি। সূত্রের দাবি, তিনি আদতে কুখ্য়াত হাক্কানি নেটওয়ার্কের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা ছিলেন।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের পেশ করা তথ্য অনুসারে, আফগানিস্তানে টানা ২০ বছর ধরে ধ্বংসলীলা ও তাণ্ডব চালিয়েছিল এই হাক্কানি নেটওয়ার্কের জঙ্গিরা। পরবর্তীতে তারাই আফগানিস্তানের সরকারের মাথায় গিয়ে বসে!
খইলাল হাক্কানির মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন তাঁর ভাইপো আনাস হাক্কানি। তিনি বলেন, 'আমরা একজন অত্যন্ত সাহসি মুজাহিদকে হারালাম। আমরা কখনও তাঁকে ভুলব না। তাঁর বলিদান ভুলব না।'
খইলাল হাক্কানির ভাইপো আরও জানিয়েছেন, এদিন তাঁর কাকা মসজিদে গিয়েছিলেন বিকেলের প্রার্থনা করতে। সেই প্রার্থনা সেরে তিনি যখন মসজিদ থেকে বের হচ্ছেন, তখনই সেখানে এক ভয়াবহ বিস্ফোর হয়। তাতেই প্রাণ যায় একদা জঙ্গি নেতা এবং ইদানীংকালের এই কার্যনির্বাহী মন্ত্রীর।
এদিকে এই ঘটনায় পাকিস্তান নাকি 'স্তম্ভিত'! সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে অন্তত তেমনটাই দাবি করা হচ্ছে। পড়শি দেশের বিদেশ মন্ত্রী ইশাক দার জানিয়েছেন, 'পাকিস্তান দ্বর্থ্যহীনভাবে সমস্ত ধরনের সন্ত্রাসবাদের প্রতিবাদ জানাচ্ছে।'
প্রসঙ্গত, যে আফগানিস্তানে একটা সময় সন্ত্রাস চালিয়েছে তালিবান। আজ তারাই সেদেশে সরকার বানিয়ে বসে পড়লেও সন্ত্রাসে কিন্তু রাশ টানা সম্ভব হয়নি। এর জন্য আগাগোড়া বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠী, এমনকী পাকিস্তানকে পর্যন্ত দোষারোপ করেছে তালিবরা। তারপরও দেশের নানা প্রান্তে, বিশেষ করে শহরাঞ্চলে হামলা বন্ধ হয়নি।