নানা মহলের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ নাকি জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদীদের নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত হয়েছে! কিন্তু, শুধুই কি পশ্চিমবঙ্গ? বর্তমান প্রেক্ষাপটে, বিশেষত বাংলাদেশে যা চলছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের বাদবাকি রাজ্যগুলির পরিস্থিতি ঠিক কেমন? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করতেই সংবাদমাধ্যমের হাতে এল এক ভয়ঙ্কর তথ্য!
এবিপি আনন্দ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, এই বাংলার প্রতিবেশী রাজ্য অসমেও ঘাঁটি গাড়তে শুরু করেছে জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদীরা। যাদের মূল লক্ষ্য, পশ্চিমবঙ্গে নাশকতা ছড়ানো!
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলার অধীনে বাংলা-অসম সীমানা থেকে মাত্র ৫১ কিলোমিটার দূরেই কার্যত 'সন্ত্রাসের চাষ' হচ্ছিল। গোয়েন্দাদের তৎপরতা ও অভিযানে আপাতত সেই ঘাঁটি থেকে জঙ্গিদের উৎখাত করা গেলেও 'নিশ্চিন্তে আর থাকা গেল না' বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
উল্লেখ্য, গত প্রায় দু'সপ্তাহের মধ্যে অসম, কেরালা ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে জঙ্গি গোষ্ঠী 'আনসারুল্লাহ বাংলা টিম'-এর ১২জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে অসম পুলিশ।
জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সীমানা থেকে মাত্র ৫১ কিলোমিটার দূরে অসমের কোকরাঝাড়ে ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল এই আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের জঙ্গিরা। আলিপুরদুয়ার শহর থেকে যার দূরত্ব মাত্র ৮৭ কিলোমিটার।
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ঠিক এই জায়গাতেই একটি নদীর চরে 'জঙ্গি তৈরির কারখানা' বানিয়েছিল আনসারুল্লাহ বাংলা টিম। একটি নদীর চরে অস্থায়ীভাবে তৈরি করা হয়েছিল সেই ঘাঁটি।
ইতিমধ্য়েই সেখানে অভিযান চালিয়েছে অসম পুলিশ। তবে, এখনও পড়ে রয়েছে - বাঁশের তৈরি কাঠামো আর ত্রিপলের আচ্ছাদন। গোয়েন্দাদের অনুমান, এখানেই জঙ্গিদের শেখানো হত বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র চালানো, অত্যাধুনিক আইইডি তৈরি ও তার ব্যবহার প্রভৃতি।
অসমের নামাপাড়ার কাছ দিয়ে বয়ে চলেছে গৌরাঙ্গ নদী। এই নদীর চর সারাবছর জেগে থাকে না। বছরের ছ'মাস এই চর দেখা যায়। কিন্তু, ভুটানে বৃষ্টি বাড়লেই সেই জল প্রবাহিত হয়ে এখানে পৌঁছয় এবং চর ডুবিয়ে যায়। ফলত, বছরের বাকি ছ'মাস এই চর থাকে জলমগ্ন।
আনসারুল্লাহ বাংলা টিম এই চরকেই জঙ্গি তৈরির ক্লাসরুম হিসাবে বেছে নিয়েছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই চর ব্যাবহার করে দিনের পর দিন সন্ত্রাসবাদী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। অন্তত কয়েক মাস এই ক্লাস চলেছে।
সূত্রের আরও দাবি, যে বা যারা এখানে জঙ্গি তৈরির পাঠশালা চালাত, তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হল - নূর ইসলাম মণ্ডল। তবে, সে একাই এই জঙ্গি ঘাঁটির প্রশিক্ষক ছিল, এমনটা নাও হতে পারে। থাকতে পারে আরও একাধিক জঙ্গি নেতা। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই খোঁজখবর চালানো হচ্ছে।