উত্তরাখণ্ডের তুষারধসের ঘটনায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্ধারকাজ। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, উত্তরাখণ্ড সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তুষারধসের জেরে যাঁরা আটকে পড়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ৩৩ জনকে সম্পূর্ণ সুরক্ষিতভাবে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
যার অর্থ হল - এখনও ২৪ জন শ্রমিককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তাঁদেরও যাতে নিরাপদে ওই এলাকা থেকে বের করে আনা সম্ভব হয়, তার জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছেন উদ্ধারকারীরা। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতীয় বায়ু সেনার বিমানবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাতে যেকোনও সময়ে প্রয়োজন হলেই তাদের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) মানা উপত্যকার কাছে একটি ভয়াবহ তুষারধসের ঘটনা ঘটে। তার জেরেই 'বর্ডার রোডস অরগানাইজেশন' (বিআরও)-এর ৫৭ জন শ্রমিক আটকে পড়েন। এই ঘটনা জানাজানি হতেই শুরু হয় উদ্ধারকাজ।
উদ্ধারকারীদের তৎপরতায় এদিন বিকেল ৫টার মধ্যেই ৩২ জন শ্রমিককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। পরে আরও একজনকে উদ্ধার করা হয়। উত্তরাখণ্ড বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের পক্ষ থেকে একথা জানানো হয়েছে। ওই বিভাগের তরফে জারি করা একটি বিবৃতি থেকে জানা গিয়েছে, চামোলি জেলার বদ্রীনাথ ধাম থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে এই বিপর্যয় ঘটেছে।

এই ঘটনা সম্পর্কে যাতে সমস্ত ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা সহজ হয়, তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই সরকারের পক্ষ থেকে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি নিজেও সেখানে পৌঁছেছেন। দেরাদুনের তথ্য প্রযুক্তি পার্কে এই কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সেখানে পৌঁছে উদ্ধারকাজ সংক্রান্ত সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, রোজের মতোই নিজেদের কাজে ব্যস্ত ছিলেন বিআরও শ্রমিকরা। সেই সময় হঠাৎই তুষারধসের কবলে পড়েন তাঁরা। যেখানে তাঁদের শিবির ছিল, সেখানেই এই ঘটনা ঘটে। ফলে শ্রমিকরা একসঙ্গে সকলে আটকে পড়েন। সংশ্লিষ্ট সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সীমান্ত এলাকার উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে ওই ঘটনা ঘটে।
মুখ্যমন্ত্রী ধামি জানিয়েছেন, এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দফতর থেকে নিয়মিত রাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, এই ঘটনার পরই সরকারের তরফে জোশিমঠে একটি অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারণ, যে শ্রমিকরা এই দুর্ঘটনার ফলে আটকে পড়েন, তাঁরা অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক। বিভিন্ন রাজ্য থেকে তাঁরা উত্তরাখণ্ডে কাজ করতে এসেছেন। তাঁদের প্রিয়জনরা যাতে উদ্ধারকাজ সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে পারেন, সেই কারণেই সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়।