'কামিনী' ট্যাবলেট খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হল অস্ট্রেলিয়ার এক নাগরিককে। যার জেরে নতুন করে কামিনী ট্যাবলেট নিয়ে স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করতে হয় সেদেশের স্থানীয় প্রশাসনকে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে, ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায়। যে কামিনী ট্যাবলেট নিয়ে এত আলোচনা, তার পোশাকি নাম - 'মুলতানি কামিনীবিদ্রবণ রস'।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ওই ট্যাবলেটের উপাদানের মধ্যে পারদ ও সীসার হদিশ পাওয়া গিয়েছে। যা অত্যন্ত ক্ষতিকর হিসাবে গণ্য করা হয়। মনে করা হচ্ছে, এই ধরনের বিষাক্ত উপাদানের কারণেই কামিনী ট্যাবলেট খেয়ে ওই ব্যক্তি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে তাঁকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে আরও দাবি করা হয়েছে, এই কামিনী ট্যাবলেট বেআইনিভাবে অস্ট্রেলিয়ায় আমদানি করা হয়েছিল। আক্রান্ত ব্যক্তি সেটি অ্যাডিলেডের একটি দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় সুপার মার্কেট থেকে কেনেন।
অনেকেই বিশ্বাস করেন, কামিনী ট্যাবলেট খেলে তা বলবর্ধক হিসাবে কাজ করে এবং এই ট্যাবলেট খেলে উত্তেজনাও বাড়ে। এটি গাড় রঙের হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, এই ট্যাবলেটের উপাদান যেকোনও মানুষের জন্যই ক্ষতিকর।
এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে আমজনতাকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন স্থানীয় স্বাস্থ্য আধিকারিক ক্রিস লিজ। তিনি বলেন, 'এই ট্যাবলেটে প্রচুর পরিমাণে ধাতু এবং মাদক জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করা হয়। যা অত্যন্ত ক্ষতিকর।'
ক্রিস জানান, অতীতেও কামিনী ট্যাবলেট পরীক্ষা করে তাতে একাধিক ক্ষতিকর উপাদানের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। যে কারণে গত কয়েক বছর ধরে আমজনতাকে এই ট্যাবলেট ব্যবহার না করার বিষয়ে সচেতনও করা হচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার আইন অনুসারে, কামিনী ট্যাবলেটে যে সমস্ত উপাদান ব্যবহার করা হয়, সেগুলি বিষাক্ত। তা অস্ট্রেলীয় মানদণ্ড পার করতে আগেই ব্যর্থ হয়েছে। নিরাপত্তা, গুণমান এবং কার্যকারিতা - এই তিন মানদণ্ডেই ডাহা ফেল করেছে এই ট্যাবলেট।
এই ট্যাবলেটে কোডাইন ও মরফিনের মতো বিষাক্ত উপাদান ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ। যার জেরে এই ট্যাবলেট খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে। যেমন - পেটে ব্যথা, বমি ভাব, মাথাব্যথা প্রভৃতি।
এমনকী, এই ট্যাবলেট খেয়ে জটিল স্নানুরোগও হতে পারে। যার জন্য রোগীকে হাসপাতালে ভর্তিও করতে হতে পারে।
এইসব নানা কারণে অস্ট্রেলিয়ায় কামিনী ট্যাবলেট নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গোপনে এবং বেআইনিভাবে এই ট্যাবলেট বিদেশ থেকে আমদানি করান এবং তা মুদিখানা দোকানে বিক্রি করেন। কিছু অনলাইন সাইটেও এই ট্যাবলেট বিক্রি করা হয় বলে অভিযোগ।