মস্কোয় যেভাবে তাঁদের রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকতে হচ্ছে, তাতে একেবারেই নাকি খুশি নন সিরিয়ার পদচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের স্ত্রী আসমা আল-আসাদ। আর সেই কারণেই স্বামীর সঙ্গে পাকাপাকিভাবে বিচ্ছেদ চান তিনি!
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে যে খবর সামনে আসছে, সেই অনুসারে - ইতিমধ্য়েই বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা রুজু করেছেন আসমা আল-আসাদ। তাঁর একান্ত ইচ্ছা, দাম্পত্যের পাট যত দ্রুত সম্ভব চুকিয়ে ফেলে লন্ডনে ফিরে যাওয়া!
প্রসঙ্গত, লন্ডনই হল তাঁর হোমটাউন। বিয়ের আগে পর্যন্ত সেখানেই থেকেছেন তিনি। এখন আবার সেই বিলেতেই ফিরতে চান আসমা। তুরস্ক এবং আরবের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে মূলত এই দাবি করা হচ্ছে।
সিরিয়ান বংশোদ্ভূত আসমার জন্মও হয়েছিল লন্ডনে। তাঁর বাবা-মা দু'জনই সিরিয়ান। আসমা নিজে একজন ব্রিটিশ-সিরিয়ান নাগরিক। ২০০০ সালে ২৫ বছর বয়সে লন্ডনে ডাক্তারি পড়তে আসা বাশার আল-আসাদের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তারপরই স্বামীর সঙ্গে থাকতে সিরিয়া চলে আসেন তিনি। বর্তমানে তাঁর বয়স ৪৯ বছর এবং তিনি সিরিয়ার পদচ্যুত ফার্স্ট লেডি।
শোনা যাচ্ছে, রাশিয়ার একটি আদালতেই বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা ঠুকেছেন আসমা আল-আসাদ। এবং তিনি যাতে মস্কো ছেড়ে লন্ডন পাড়ি দিতে পারেন, তার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে বিশেষ অনুমতিও চেয়েছেন।
দ্যা জেরুজালেম পোস্ট-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, আসমা আল-আসাদের আবেদন খতিয়ে এবং বিবেচনা করে দেখছে রুশ প্রশাসন।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের প্রথম দিকেই সিরিয়া ছেড়ে মস্কো পালাতে বাধ্য হন বাশার আল-আসাদ। কারণ, বিদ্রোহীদের হাতে ইতিমধ্যেই রাজ্যপাট খোয়াতে হয়েছে তাঁকে। প্রায় ২৪ বছর সিরিয়ার সর্বোচ্চ তখতে আসীন থাকার পর 'বন্ধু দেশ' রাশিয়ায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হন বাশার। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী আসমা আল-আসাদ-সহ পরিবারের বাকি সদস্যরাও।
এদিকে, সিরিয়ায় বাশার রাজত্বের পতনে সেখানকার মানুষ যে খুব একটা কষ্ট পেয়েছে, তেমনটা মনে হচ্ছে না। কারণ, তাদের অভিযোগ, গত ২৪ বছর ধরে বাশার ও তাঁর তথাকথিত সরকার আদতে সিরিয়ায় স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা করেছিল। যার খেসারত দিতে দিতে সিরিয়ার সাধারণ মানুষ বিধ্বস্ত। বরং, বাশারের পতনে তাদের অধিকাংশকেই খুশি হতে দেখা গিয়েছে।
এই পালাবদলের নেপথ্যে রয়েছে যে বিদ্রোহী গোষ্ঠী, তার নাম - হায়াত তেহরির আল-শাম (এইচটিএস)। লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, বাশার বরাবরই রাশিয়ার বন্ধু। আবার গত কয়েক বছর ধরে আমেরিকা এবং ইউরোপের সঙ্গে বাশারের সিরিয়ার সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।
এদিকে, আমেরিকার হিসাব অনুসারে - খাতায় কলমে এখনও এইচটিএস হল একটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। কিন্তু,তাদের সর্বোচ্চ নেতা আবু মহম্মদ আল-জুলানির নামে এত দিন যে ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পুরস্কার ধার্য করে রেখেছিল আমেরিকা, সদ্য তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।