১০০-রও বেশি শিশু, কিশোর এবং তরুণের সঙ্গে ঘটে যাওয়া নিদারুণ অত্যাচারের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠল 'চার্চ অফ ইংল্যান্ড' কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে!
সূত্রের দাবি, যিনি এই অপকর্ম ঘটিয়েছিলেন, তিনি কেমব্রিজের ব্যারিস্টার ছিলেন! নাম, জন স্মিথ কিউসি। দাবি করা হচ্ছে, এই ব্যক্তি 'চার্চ অফ ইংল্যান্ড'-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং সেই সুযোগেই শিশু, কিশোর ও তরুণদের উপর অত্য়াচার করতেন।
সংশ্লিষ্ট একটি রিপোর্টে অন্তত এমনটাই দাবি করা হয়েছে বলে তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড। সংশ্লিষ্ট রিপোর্টেই দাবি করা হয়েছে, এই 'ঘৃণ্য' ঘটনা এতদিন চার দেওয়ালের মধ্যেই ধামাচাপা দিয়ে রেখেছিল সংশ্লিষ্ট চার্চ কর্তৃপক্ষ!
যার জেরে এই ধরনের আবাসিক প্রতিষ্ঠানগুলি আদৌ শিশু ও নাবালকদের জন্য সুরক্ষিত কিনা, সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
বিবিসি-কে উদ্ধৃত করে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বহু দিন ধরে এই সংক্রান্ত একটি স্বাধীন পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট প্রকাশের অপেক্ষা করা হচ্ছিল। অবশেষে সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে।
তাতে দাবি করা হয়েছে, জন স্মিথ কিউসি ছিলেন সেই ব্যক্তি যিনি 'চার্চ অফ ইংল্যান্ড'-এর সঙ্গে যুক্ত থেকে লাগাতার ওই শিশু, কিশোর ও তরুণদের শোষণ করে গিয়েছেন। তাঁকে 'সিরিয়াল অ্য়াবুউসার' বলেও ভর্ৎসনা করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষণ রিপোর্টে।
প্রসঙ্গত, যে স্মিথকে নিয়ে এত আলোচনা, তিনি আর ইহলোকে নেই। কেপ টাউনে থাকাকালীন ২০১৮ সালে ৭৭ বছর বয়সে প্রয়াত হন তিনি।
তাঁর বিরুদ্ধে অত্যাচারের অসংখ্য অভিযোগ ছিল। তাতে বলা হয়েছিল, ১৯৭০ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে স্মিথ যখন তাঁর উইনচেস্টারের বাড়িতে থাকতেন, সেই সময়েই খ্রিস্টান সামার ক্যাম্পের সময় তিনি অল্পবয়সী ছেলেদের সঙ্গে আলাপ করতেন এবং তারপর তাদের উপর অত্যাচার করতেন।
সংশ্লিষ্ট ঘটনার পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর আক্রান্ত প্রত্যেকের কাছে আবারও ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন ক্যান্টারবারির আর্চবিশপ। তাঁর মতে স্মিথের এই ঘৃণ্য আচরণ খ্রিস্ট ধর্মের সত্যতাকেই অপমানিত করেছে।
সবথেকে অদ্ভূত বিষয় হল, এহেন স্মিথ আবার ব্যারিস্টার হিসাবেও কাজ করতেন! তিনি নৈতিকতার প্রচারক মেরি হোয়াইট হাউসের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন! সেই একই সময়ে তিনি খ্রিস্টান তরুণদের জন্য ক্যাম্পও চালাতেন।
তিনি যে এই সবকিছুর আড়ালে অল্পবয়সীদের উপর পৈশাচিক অত্যাচার করতেন, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই সেই সংক্রান্ত একটি তদন্তমূলক রিপোর্ট সম্প্রচার করেছিল চ্যানেল ফোর নিউজ।
শুধু তাই নয়। তারও অনেক আগে ১৯৮২ সালে ১০০-রও বেশি শিশু, কিশোর ও তরুণের উপর নিগ্রহের বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছিল সংশ্লিষ্ট একটি ট্রাস্টের রিপোর্ট। কিন্তু, চার্চ কর্তৃপক্ষ সব জানার পরও কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ।