ফের অতুল সুভাষ আত্মহত্যার ছায়া! এবারের ঘটনাস্থল উত্তরপ্রদেশ। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, বৃহস্পতিবার রাতে আত্মঘাতী হন ২৫ বছরের এক যুবক।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, প্রয়াত যুবকের নাম সুধীর কুমার। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি আদতে খোর গ্রামের বাসিন্দা। বাড়ির কাছেই একটি গাছের ডাল থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর দেহ পাওয়া গিয়েছে। সেই গাছটি আর তাঁর বাড়ির মাঝের দূরত্ব মেরেকেটে ২০০ মিটার হবে।
প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, এটি একটি আত্মহত্যারই ঘটনা। কিন্তু, ঘটনা যদি এখানেই থামত, তাহলে এটাও হয়তো আর পাঁচটা আত্মহত্যার ঘটনার মতোই গণ্য করা হত। আসলে, গোল বেঁধেছে অন্য জায়গায়।
তথ্য বলছে, 'আত্মঘাতী' ওই যুবক নিজের জীবনের চরম সিদ্ধান্ত নেওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছিলেন। আর তাতেই বেঙ্গালুরুর প্রযুক্তিবিদ অতুল সুভাষের মর্মান্তিক পরিণতির ছায়া দেখতে পাচ্ছেন নেট নাগরিকরা।
সুধীর কুমারের শেষ ফেসবুক পোস্টে কয়েকটি ছবি রয়েছে। সেগুলির মধ্যে একটি হল - তাঁর বিয়ের শংসাপত্র বা ম্যারেজ সার্টিফিকেট। আর বাকিগুলি হল সেই বিয়েরই ছবি। এই পোস্টের ক্যাপশনে সুধীর লিখেছেন, 'হামারি আধুরি কাহানি' (আমাদের অপূর্ণ কাহিনি)!
এছাড়াও, ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুই পৃষ্ঠার সেই দীর্ঘ সুইসাইড নোটে নাকি অনেক কথা লিখে গিয়েছেন সুধীর। বিস্তারিতভাবে জানিয়েছেন, কেন তিনি নিজেকে শেষ করে দেওয়ার মতো মর্মান্তিক ও চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন!
সেই অনুসারে, বারাবাঁকি শহরে থাকার সময় এক যুবকের সঙ্গে রুম শেয়ার করতেন সুধীর। সেই যুবকের এক বোন রয়েছেন। যিনি বারাবাঁকিতে তাঁর দাদার সঙ্গে দেখা করতে আসতেন।
সেই সূত্রেই সুধীরের সঙ্গে ওই তরুণীর প্রথম দেখা হয়। তিনি আদতে সুধীরের গ্রামের পাশের গ্রামেই থাকতেন। ক্রমে তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব তৈরি হয়। তা গড়ায় প্রেমে। পরে এই দুই তরুণ-তরুণী বিয়ে করে নেন।
প্রথম দিকে এই বিয়ে সমর্থন করেছিলেন সুধীরের রুম পার্টনার, মেয়েটির দাদা। কিন্তু, পরে তিনি এই সম্পর্কের বিরোধিতা শুরু করেন।
সুধীর তাঁর সুইসাইড নোটে লিখে গিয়েছেন, ছ'মাস আগে কোর্ট ম্য়ারেজ করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু, তারপর থেকেই তাঁর শ্বশুর-শাশুড়ি এবং তাঁর শ্যালক তাঁর উপর তুমুল মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। আর সেই কারণেই তিনি নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
স্থানীয় সার্কেল অফিসার সৌরভ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, সুধীরের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।