করোনা পরবর্তী সময়ে যেখানে বিশ্বের বহু দেশেই 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' বা বাড়ি থেকে কাজ করার প্রবণতা এবং ব্যবস্থা বেড়েছে, সেখানে অনেকটা অন্য় ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে ভারতীয় সংস্থাগুলিতে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, ভারতের ৯০ শতাংশেরও বেশি সংস্থা, সপ্তাহে অন্তত তিনদিন কর্মীরা যাতে অফিসে এসে এবং অফিসে বসে কাজ করেন, তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। যা আন্তর্জাতিক গড়ের তুলনায় খানিকটা বেশি।
'জিল' নামে যে সংস্থা এই সমীক্ষা করেছে, তাদের দাবি, এই মুহূর্তে সারা বিশ্বের গড় হিসাব ধরলে, কর্মীদের অফিসে এনে কাজ করাচ্ছে প্রায় ৮৫ শতাংশ সংস্থা। একইসঙ্গে, ওই সমীক্ষা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, কর্মীদের অফিসে বসে কাজ করার ক্ষেত্রে ভারত এই মুহূর্তে বিশ্বে শীর্ষ স্থানে রয়েছে।
সমীক্ষকদের আরও দাবি, আগামী দিনে অফিস থেকে কাজ করানোর এই প্রবণতা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁদের অনুমান, ২০৩০ সালের মধ্যেই ভারতের অন্তত ৫৪ শতাংশ সংস্থা অফিসে বসে কাজের দিনের সংখ্যা আরও বাড়াবে। বিশ্বের নিরিখে এই পরিমাণটা থাকবে ৪৩ শতাংশের কাছাকাছি।
তথ্য বলছে, ভারতের বর্তমান কাজের পরিবেশে এক বিরাট বিবর্তন চলছে। তার কারণ, বহু ক্ষেত্রেই আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বাড়ছে।
ওই সমীক্ষায় এই বিষয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে এসেছে। অনুমান করা হচ্ছে, আগামী ৫ বছরের মধ্যে ভারতীয় বাণিজ্য ক্ষেত্রে এইআই-নির্ভর ব্যবসাগুলিতেই ৯৫ শতাংশ বিনিয়োগ করা হবে।
বলা হচ্ছে, মূলত এআই-এর ব্যবহার বৃদ্ধির কারণেই ভারতীয় কাজের জায়গাগুলির খোলনলচে বদলে যাচ্ছে। আগামী দিনে অন্তত ৯৪ শতাংশ কাজের পরিবেশে এই প্রভাব পড়তে চলেছে।
সূত্রের দাবি, আন্তর্জাতিক স্তরে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। যার আওতায় বিশ্বের নানা প্রান্তের ২,৩০০টি কর্পোরেট রিয়েল এস্টেট এবং বাণিজ্য সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয় - এমন সংস্থার উপর সমীক্ষা চালানো হয়েছে।
সমীক্ষকরা আরও জানিয়েছেন, আগামী দিনে কর্পোরেট সেক্টরের স্থায়িত্ব আরও বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া হবে। তাঁদের দাবি, সমীক্ষা চলাকালীন প্রায় ৭৭ শতাংশ উত্তরদাতাই জানিয়েছেন, তাঁরা ব্যবসা বাড়ানোর কথা এবং তার স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করার কথা ভাবছেন।
এমনকী, পরিবেশের ক্ষতি না করেই যাতে ব্যবসায়িক স্থিতি আসে, তার জন্য তাঁদের কাছে ইতিমধ্যেই নির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে বলেও দাবি করেছেন ৭০ শতাংশ উত্তরদাতা।
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, প্রায় ৫০ শতাংশ সংস্থা জানিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যেই তারা কোনও সেরামানের পরিবেশবান্ধব বহুতলে তাঁদের অফিস নিয়ে যেতে রাজি এবং তার জন্য ঋণের কিস্তি গুণতেও প্রস্তুত।