দিন কয়েক আগে ত্রিপুরার আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহযোগী হাই-কমিশনে যে হামলার ঘটনা ঘটে, তাতে যুক্ত থাকার অভিযোগে 'হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি' (এইচএসএস) নামে একটি সংগঠনের কঠোর সমালোচনা করে ঢাকা। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ওই সংগঠনটি নাকি এক সপ্তাহ আগেই তৈরি করা হয়েছে!
হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশে হিন্দু-সহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা ও অত্যাচারের অভিযোগ উঠছে। ইস্কনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেফতার হওয়ার পর সেই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
দাবি করা হচ্ছে, এই প্রেক্ষাপটে হিন্দুদের এবং হিন্দু মনোভাবাপন্ন সমস্ত সংগঠনকে একজোট করতেই নাকি হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি গড়ে তোলা হয়েছে। এবং এই পদক্ষেপের নেপথ্যে আরএসএস ও ভিএইচপি-র মতো বৃহৎ ও প্রথম সারির হিন্দু সংগঠনেরও প্রভাব রয়েছে।
এইচএসএস-এর নেতা শঙ্কর রায় দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে সারা দেশে এমন একাধিক সংগঠন গড়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য, দেশদ্রোহিতার অভিযোগে গত ২৫ নভেম্বর ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ইস্কনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করা হয়। তারপরই বাংলাদেশ জুড়ে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়।
অভিযোগ, এই গ্রেফতারি এবং বাংলাদেশে ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননার প্রতিবাদে আগরতলায় বাংলাদেশের ওই কূটনৈতিক ভবনে হামলা চালায় এইচএসএস। সেই ঘটনায় পরবর্তীতে সাতজনকে গ্রেফতার করা হলেও পরে তাঁদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়।
ইতিমধ্যেই বজরং দল জানিয়েছে, এইচএসএস-এর সঙ্গে অবশ্যই তাদের যোগাযোগ রয়েছে। কিন্তু, বাংলাদেশি কূটনৈতিক ভবনে যে হামলা চালানো হয়েছে, তার সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই।
এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে আগরতলায় একের পর এর বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে চলেছে - বৈদিক ব্রাহ্মণ সমাজ, জাগো হিন্দু জাগো, সনাতনী যুব - নামে বিভিন্ন সংগঠন। অসমেও একই ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সামিল হয়েছে - সনাতনী ঐক্য মঞ্চ - নামে একটি সংগঠন।
আগরতলার হামলার ঘটনায় নিন্দা করলেও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা পূর্ণচন্দ্র মণ্ডল বলেন, 'আমার মনে হয়, বাংলাদেশে যা ঘটছে, এই ঘটনা আদতে তারই বিরুদ্ধে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ।'
তিনি আরও বলেন, 'যখনই বাংলাদেশে কোনও ঘটনা ঘটে, হিন্দুদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। হাসিনার সময়েও এমন হয়েছে। এখনও হচ্ছে। এই ধরনের ষড়যন্ত্র ও অত্যাচার বন্ধ হওয়া দরকার। আমরা ওদের স্বাধীনতা অর্জন করতে সাহায্য করেছিলাম। ওরা যদি না বদলায়, তাহলে ভারতেরও বাংলাদেশকে বয়কট করা উচিত।'
পূর্ণচন্দ্র মণ্ডল আরও বলেন, অবিলম্বে বাংলাদেশে সমস্ত পণ্য সরবরাহ বন্ধ করা উচিত ভারতের।