জীবনের অন্তিম লগ্নে এসে কি বুক ভরে শ্বাস নেওয়ার জন্যও ছটফট করতে হয়েছিল নিহত হেজবোল্লা প্রধান হাসান নাসারুল্লাহকে? ইজরায়েলি সংবাদমাধ্যমে অন্তত তেমনটাই দাবি করা হচ্ছে।
চ্যানেল ১২-এ এই সংক্রান্ত যে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর ইজরায়েলি সেনার আকাশ পথে চালানো হামলায় নিকেশ করা হয় ওই জঙ্গিনেতাকে। সেই সময় তিনি একটি গোপন বাঙ্কারে লুকিয়ে ছিলেন।
তাঁকে খতম করতে 'বাঙ্কার-বাস্টিং' বোমা নিক্ষেপ করা হয়। তার ফলে ওই বাঙ্কারের ভিতরের অংশ প্রাণঘাতী গ্যাসে পূর্ণ হয়ে যায়। সেই অবস্থায় শ্বাসকার্য চালানোর মতো পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রাণবায়ু বা অক্সিজেন ওই বাঙ্কারে ছিল না। ফলত, ছটফট করতে করতেই মৃত্যুর কাছে হার মানতে হয় হেজবোল্লা প্রধানকে।
কীভাবে মারা গেলেন হেজবোল্লা প্রধান হাসান নাসারুল্লাহ?
নিহত জঙ্গিনেতার মৃতদেহ উদ্ধারের পর দেখা যায়, তাঁর দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। যার থেকে এটা স্পষ্ট যে যুদ্ধের প্রকোপ থেকে নিজেকে বাঁচাতে গোপন ও নিরাপদ আশ্রয়ে ছিলেন তিনি।
কিন্তু, তাঁর শরীরের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিল, শ্বাসরোধ হয়েই মৃত্যু হয়েছে। তার থেকেই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, বিস্ফোরণে ফলে যে মারণ গ্যাস চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল, তিনিও তার কবলে পড়েছিলেন।
অর্থাৎ, সরাসরি বিস্ফোরণে তাঁর মৃত্যু হয়নি। বরং, তাঁর মৃত্যু হয়েছে বিস্ফোরণের বেশ খানিকটা পর, তিলে তিলে! ইজারায়েলি সংবাদমাধ্যমে অন্তত তেমনটাই বর্ণনা করা হয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে হাসানের দেহ যাঁরা উদ্ধার করেছিলেন, সেই মেডিক্যাল অফিসার এবং নিরাপত্তা আধিকারিকরা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, দক্ষিণ বেহরুট থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ওই আধিকারিকরাই দাবি করেন, সরাসরি বিস্ফোরণের জেরে মৃত্যুর কোনও প্রমাণ বাহ্যিকভাবে অন্তত হাসানের শরীরে ছিল না। খুব সম্ভবত, মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগেই তিনি একটি জরুরি বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
সূত্রের দাবি, হেজবোল্লার অন্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা ছিল তাঁর। আর ঠিক তার আগেই আকাশ পথে হামলা শুরু করে ইজরায়েলের সেনা। যার জেরে প্রাণ খোয়াতে হয় হাসান নাসারুল্লাহকে।
সূত্রের আরও দাবি, মাটির অনেকটা নীচে তৈরি করা গোপন এবং অত্যন্ত সুরক্ষিত বাঙ্কারে থাকতেন হেজবোল্লা প্রধান। কিন্তু, ২৭ সেপ্টেম্বর সেই স্থান লক্ষ করেই ৮০ টন ওজনের বাঙ্কার-বাস্টিং বোমা ছোড়ে ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। যা হাসানের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করার পক্ষে যথেষ্ট ছিল।