দুই অনলাইন ফুড ডেলিভারি সংস্থা সুইগি ও জোম্যাটোর বিরুদ্ধে ভারতীয় আইন ভাঙার অভিযোগ উঠল। এই অভিযোগে করেছে 'কম্পিটিশন কমিশন অফ ইন্ডিয়া' (সিসিআই)।
তাদের দাবি, এই দুই সংস্থাই ভারতের 'অ্য়ান্টিট্রাস্ট অ্য়ান্ড কম্পিটিশন' আইন লঙ্ঘন করেছে। যদিও সিসিআই এই অভিযোগ সংক্রান্ত কোনও নথি বা তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি।
রয়টার্স সূত্রে দাবি করা হয়েছে, যে রেস্তোরাঁ ও দোকানগুলির খাবার এই দুই সংস্থা অনলাইন অর্ডারের মাধ্যমে সরবরাহ করে, সেই রেস্তোরাঁ ও দোকানগুলির সঙ্গে ন্যায্য ব্যবহার করেনি তারা। বদলে পছন্দের কিছু রেস্তোরাঁকে বেছে নিয়ে তাদের প্রতি ব্যবসায়িক পক্ষপাতিত্ব করেছে।
সংশ্লিষ্ট রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, জোম্যাটো কয়েকটি রেস্তোরাঁর সঙ্গে 'বিশেষ চুক্তি' করেছে। এবং সেই চুক্তি করা হয়েছে কম কমিশনের বিনিময়ে।
অন্যদিকে, জোম্য়াটোর সবথেকে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী সুইগি কিছু রেস্তোরাঁকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা ওই রেস্তোরাঁগুলির ব্যবসা বাড়িয়ে দেবে, যদি তারা কেবলমাত্র সুইগির মাধ্যমেই অনলাইন অর্ডার নেওয়া এবং সরবরাহ করার ব্যবস্থাটি চালায়।
প্রসঙ্গত, হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা এই রিপোর্টের সত্যাসত্য যাচাই করেনি।
সিসিআই তার তদন্তে জানতে পেরেছে, যেভাবে সুইগি ও জোম্য়াটো নির্দিষ্ট কিছু রেস্তোরাঁর সঙ্গে বিশেষ বোঝাপড়া করেছে, তাতে বাজারে ন্যায্য প্রতিযোগিতার পরিসর কমে গিয়েছে।
সূত্রের খবর, বিষয়টি প্রথম নজরে নিয়ে আসে ভারতের জাতীয় রেস্তোরাঁ অ্যাসোসিয়েশন। তারা এই বিষয়ে ২০২২ সালে সুইগি ও জোম্য়াটোর বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করে।
সেই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতেই তদন্তে নামে সিসিআই। সেই তদন্তে সুইগি ও জোম্যাটোর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।
কিন্তু, তথ্য গোপন রাখার নিয়ম অনুসারে, সিসিআই সেই তথ্য প্রকাশ্যে আনেনি। কিন্তু, ২০২৪ সালের মার্চ মাসে তাদের তদন্ত রিপোর্ট সুইগি, জোম্য়াটো এবং জাতীয় রেস্তোরাঁ অ্যাসোসিয়েশনকে পাঠিয়ে দিয়েছে তারা। যদিও সেই খবর এত দিন সামনে আসেনি।
সিসিআই-এর তদন্ত চলাকালীন, সুইগি নাকি তাদের কাছে দাবি করে যে ২০২৩ সালেই 'সুইগি এক্সক্লুসিভ' শীর্ষক বিভাগটি তারা বন্ধ করে দিয়েছে।
কিন্তু, শীঘ্রই মূলত শহরতলি ও ছোট শহরগুলিতে ওই একই ধরনের একটি পরিষেবা শুরু করার কথা ভাবছে তারা। যার নাম দেওয়া হয়েছে, 'সুইগি গ্রো'।
অন্যদিকে, জোম্য়াটোর বিরুদ্ধে যে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, তারা সংশ্লিষ্ট রেস্তোরাঁগুলিকে দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে এবং ক্রেতাদের জন্য বিশেষ ছাড় চালু করতে বাধা সৃষ্টি করেছে।
এমনকী, কয়েকটি রেস্তোরাঁ বা খাবার সরবরাহকারী দোকান নিয়ম মেনে চলতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ পর্যন্ত করা হয়েছে।
সূত্রের দাবি, এই তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে চূড়ান্তে সিদ্ধান্তে উপনীত হতে আরও কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি চাইলে এই তদন্ত রিপোর্ট চ্যালেঞ্জও করতে পারে।