ঘুষ নেওয়ার মতো অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে, তবে সঙ্গে রয়েছে ‘দয়ালু’ মনও! আর সেই জায়গা থেকেই এবার ঘুষ নেওয়ার ক্ষেত্রে ইএমআই-এর অপশনও খোলা রাখছেন বেশ কিছু সরকারি অফিসার। সাধারণ মানুষের অসুবিধা খানিকটা ‘কনসিডার’ করতেই এমন উদ্যোগ। ‘দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র রিপোর্ট বলছে, এই বন্দোবস্ত চলছে গুজরাটে।
‘দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র রিপোর্ট অনুযায়ী গুজরাটের বহু অসৎ সরকারি অফিসাররা ঘুষ নেওয়ার ক্ষেত্রে ইএমআই এর কিস্তি ব্যবস্থা চালু করেছেন। এই ঘুষ নিয়ে এমন বন্দোবস্তের জন্য তাঁরা ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার ইএমআই ব্যবস্থা থেকে অনুপ্রেরণাও নিচ্ছেন। দাবি রিপোর্টের। এই নয়া বন্দোবস্ত বহু অসাধু সরকারি কর্মচারীর ঘুষ নেওয়ার প্রথার মধ্যে ঢুকে গিয়েছে বলেও দাবি রিপোর্টের। মূলত, যে নাগরিকরা আর্থিকভাবে পিছিয়ে রয়েছেন, তাঁদের যাতে ওই অসাধু সরকারি অফিসারদের ঘুষ দিতে সমস্যা না হয়, তার জন্যই এমন পদক্ষেপ। টাকা দেওয়ার বোঝা কমাতে মাসে মাসে কিস্তিতে এই টাকা পরিশোধ করার কথা বলছেন ওই অফিসাররা, দাবি রিপোর্টের। এর আগে, এসজিএসটি বিলিং দুর্নীতিতে ২১ লাখ টাকা এক ব্য়ক্তির থেকে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ ওঠে। জানা যাচ্ছে, সেই ব্যক্তিকে এই টাকার অঙ্ক পূরণ করতে ২ লাখ টাকা করে প্রতি কিস্তিতে ইএমআই দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল তাঁকে। আর এই টাকা তাঁকে প্রতি মাসের ভিত্তিতে দেওয়ার জন্য বলা হয়। যখন দেখা যায়, ওই ব্যক্তির ওপর টাকার বোঝা বাড়ছে, তখনই ৯ মাস ধরে প্রতি মাসে ২ লাখ টাকা করে ইএমআইতে ঘুষ দেওয়ার কথা বলা হয়, বলে অভিযোগ। একইভাবে ওই রাজ্যে সাইবার ক্রাইম শাখার এক পুলিশ অফিসার ১০ লাখ টাকার ঘুষ চেয়েছিলেন ৪ কিস্তিতে।
এখানেই শেষ নয়। সুরাটের গ্রামের এক পঞ্চায়েত সদস্যও এই ইএমআই-তে ঘুষ ব্যবস্থার খবর পান। তিনিও সেই সিস্টেম চালু করেন বলে অভিযোগ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ৪ এপ্রিল ৮৫, ০০০ টাকার ঘুষের দাবির। জমি সংক্রান্ত এক মামলায় তিনি সেই ঘুষ দাবি করেছিলেন এক কৃষকের থেকে। সেই গ্রামের ব্যক্তির আর্থিক পরিস্থিতি ভালো না থাকায় তাঁকে মাসে মাসে ৩৫ হাজার টাকার কিস্তিতে ঘুষ দিতে বলা হয়, বলে অভিযোগ। অতি সম্প্রতি, সবরকাঁথা জেলার এক বাসিন্দার কাছ থেকে ৪ লক্ষ টাকা ঘুষ চেয়ে দুই পুলিশ পালিয়ে যান। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার খবর অনুযায়ী, তারা ব্যক্তির থেকে ১০ লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন, আর তারমধ্যে ৪ লাখ ছিল প্রথম কিস্তি। গুজরাটের দুর্নীতি দমন ব্যুরো (ACB) এর একজন সিনিয়র আধিকারিক বলেছেন যে এই প্রথাটি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এবং বর্তমানে এটি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন ১০ টি ঘটনার অভিযোগ এসেছে তাঁদের কাছে।