আবারও কোটা, আবারও তরতাজা তরুণ প্রতিভার আত্মহননের অভিযোগ। এবার মাত্র ১৮ বছরের এক ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল কোটার একটি হস্টেলের ঘর থেকে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, নিহত ছাত্রের নাম অভিজিৎ গিরি। আদতে ওডিশার বাসিন্দা অভিজিৎ নিট-এর প্রস্তুতি নিতে কোটায় এসেছিলেন। বিজ্ঞান নগর থানার অন্তর্গত আম্বেদকর কলোনি এলাকার একটি হস্টেলে থাকতেন তিনি। হস্টেলের সেই ঘর থেকেই তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়।
আপাতত স্থানীয় একটি মর্গে তাঁর দেহ সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা সেখানে পৌঁছলে তবেই দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। অভিজিতের পরিবারকে ইতিমধ্য়েই তাঁর অকাল প্রয়াণের মর্মান্তিক খবর পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওডিশার ময়ূরভঞ্জ থেকে কোটায় পড়াশোনা করতে এসেছিলেন অভিজিৎ গিরি। তিনি কোটায় এসে থাকতে শুরু করেছিলেন ২০২৪ সালের এপ্রিল মাস থেকে।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ হস্টেলেরই এক পরিচারক অভিজিতের জন্য টিফিন নিয়ে তাঁর ঘরে যান। কিন্তু, একাধিকবার ডাকাডাকি করা সত্ত্বেও সাড়া দেননি অভিজিৎ।
এরপর ওই পরিচারক এবং হস্টেলের আরও কয়েকজন আবাসিক ছাত্র দরজা ভেঙে ঘরের ভিতর ঢোকেন। তাঁরাই প্রথম অভিজিৎকে সিলিং ফ্য়ান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন।
সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় থানায় খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছন অ্যাসিসট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর লাল সিং তনওয়ার। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পুলিশের কর্মীরাই ওই তরুণের দেহ নামিয়ে আনেন। তারপর দেহটি মর্গে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
তবে, ঘটনাস্থল থেকে কোনও সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি। তাই, এখনই এটিকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা করে দিতে চাননি এএসআই তনওয়ার। যদিও পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে এটিকে আত্মহত্যার ঘটনা বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত সরকারিভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়।
প্রসঙ্গত, কোটায় একের পর আত্মহত্যার ঘটনা সামনে আসার পরই জেলা প্রশাসনের তরফে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল, প্রত্যেকটি ছাত্রাবাসের প্রত্যেকটি সিলি ফ্যানে 'অ্য়ান্টি-সুইসাইড ডিভাইস' বাধ্যতামূলকভাবে লাগাতে হবে। কিন্তু, এই হস্টেলের সিলিং ফ্য়ানে সেই ডিভাইস ছিল না বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, নতুন বছরের প্রথম ১৬ দিনের মধ্য়েই এই নিয়ে কোটায় তিন পড়ুয়ার 'আত্মহত্যা'র ঘটনা ঘটল। গত বছর সেখানে এমন ১৭টি ঘটনা ঘটেছিল।