বাংলাদেশের বিমানঘাঁটিতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত অন্তত একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। যদিও কীভাবে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হল, তা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন দাবি করা হচ্ছে।
'ঢাকা ট্রিবিউন'-এর প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) দুপুরে কক্সবাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়। সঙ্গে সঙ্গে তার জবাব দেন বিমানবাহিনীর সদস্যরাও।
বাংলাদেশের 'ইন্টার-সার্ভিস পাবলিক রিলেশন' (আইএসপিআর)-এর পক্ষ থেকে এই প্রসঙ্গে একটি অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দাবি করা হয়েছে, বিমানবাহিনীর ঘাঁটি লাগোয়া সমিতি পাড়া বলে একটি এলাকা রয়েছে। সেই এলাকা থেকেই দুষ্কৃতীরা বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এরপর বিমানবাহিনীর তরফ থেকে পালটা পদক্ষেপ করা হলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাতের জেরে এক যুবকের মৃত্যু হয়। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম 'কালের কণ্ঠ'-এর দাবি অনুসারে - ওই যুবকের নাম শিহাব কবির নাহিদ। বছর তিরিশের ওই যুবক একজন সাধারণ ব্যবসায়ী বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু, কীভাবে তাঁর মৃত্যু হল, এই বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে এখনও পর্যন্ত সরাসরি কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, 'আজ তক বাংলা' পোর্টালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, চট্টগ্রামের ডিআজি আহসান হাবিব পলাশ এই মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত করেছেন। তাঁকে উদ্ধৃত করে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, 'আমি যতটুকু জেনেছি, বিমানবাহিনীর গুলিতেই একজনের মৃত্যু হয়েছে। আরও একজন আহত হয়েছেন।'
বাংলাদেশি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, কক্সবাজার শহরে বিমানঘাঁটি সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হবে। আর এই জমি অধিগ্রহণ নিয়েই কক্সবাজার পুরসভার অন্তর্গত সমিতি পাড়ার বাসিন্দাদের বিরোধ ও বিবাদ শুরু হয়েছে। উচ্ছেদের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন বাসিন্দারা।
অনুমান করা হচ্ছে, এই বিবাদের জেরেই সোমবার দুপুর ১২টা নাগাদ এই হামলা চালানো হয়। যা পরে সংশ্লিষ্ট দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের রূপ নেয়। অসমর্থিত বিভিন্ন সূত্র মারফত দাবি করা হচ্ছে, এই সংঘর্ষের ফলে একাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে সেকথা এখনও জানানো হয়নি।
এমনকী, হামলাকারীদের নির্দিষ্টভাবে এখনও পর্যন্ত চিহ্নিতও করা হয়নি। তবে, কক্সবাজারের ওই এলাকা রোহিঙ্গা অধ্যুষিত। কাজেই এই হামলার পিছনে তাদের কোনও যোগ রয়েছে কিনা, তা নিয়েও নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে।
প্রসঙ্গত, মহম্মদ ইউনুসের কেয়ারটেকার সরকার বাংলাদেশের শাসনক্ষমতায় আসার পর থেকেই বারবার ভারতকে যুদ্ধের হুমকি ও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। অথচ, আজকের এই ঘটনা থেকেই প্রমাণ হয়ে গেল, পড়শি দেশের বিমানবাহিনীর ঘাঁটিগুলি পর্যন্ত এতটাই অসুরক্ষিত যে অনায়াসেই সেখানে হামলা চালানো যায়!
সেগুলির নিরাপত্তার বন্দোবস্ত না করেই কি তাহলে সম্প্রতি যুদ্ধের মহড়ায় সামিল হয়েছিল বাংলাদেশের বিভিন্ন বাহিনী?