তেলাঙ্গানার নাগরকুর্নুল জেলায় সুড়ঙ্গে ধস নেমে আটকে পড়েছেন আটজন শ্রমিক। ৭২ ঘণ্টা পরেও তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। মঙ্গলবার চতুর্থ দিনে পড়েছে উদ্ধারকাজ। তবে সুড়ঙ্গে দুর্ঘটনাস্থলের কাছে দেখা দিয়েছে নতুন বিপদ। দুর্ঘটনাস্থলের কাছে প্রচুর পরিমাণ কাদা বেড়ে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে খনন কাজে। ফলে সাময়িকভাবে খনন কাজ বন্ধ রাখে উদ্ধারকারী দল। তবে ফের টানেলে ঢোকার চেষ্টা করা হচ্ছে। তারইমধ্যে র্যাট হোল মাইনাররা জানিয়েছেন যে কাজটা কঠিন। কিন্তু নাথিং ইজ ইম্পসিবল।
আরও পড়ুন : বাঁচার সম্ভাবনা 'খুব, খুব, খুব, খুব কম', তেলাঙ্গানায় টানেলে এখনও আটকে শ্রমিকরা
বিশেষজ্ঞদের দল সুড়ঙ্গ পরিদর্শন করে জানিয়েছে, কাদা প্রায় এক মিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। সুড়ঙ্গের প্রবেশপথের দিক থেকে আরও কাদা এবং জল আসছে। উদ্ধারকারী দল দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর জন্য লোকোমোটিভের রাস্তা পরিষ্কার করার চেষ্টা করছে। এছাড়াও উদ্ধারের অন্যান্য কৌশল কী হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞের মতে, ঘটনাস্থল এখনও অস্থির। ফলে গভীর খননকাজ শুরু করা হলে নতুন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাতে শুধু আটকে পড়া শ্রমিকরাই নন, উদ্ধারকারী দলের পক্ষেও জীবনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
একজন অস্ট্রেলিয়ার সুড়ঙ্গ বিশেষজ্ঞ ক্রিস কুপার জানান, ‘পুরো এলাকাটি অস্থির বলে মনে হচ্ছে। গভীর খনন চালিয়ে যাওয়া খুব বিপজ্জনক হতে পারে। প্রতি মিনিটে প্রায় ৩,২০০ লিটার জল সুড়ঙ্গে প্রবেশ করছে। তার ফলে জল প্রচুর পরিমাণ বালি, পাথর এবং ধ্বংসাবশেষের সঙ্গে মিশে আরও কাদা তৈরি করছে। তবে জল উদ্বেগের কারণ নয়। কারণ সুড়ঙ্গ থেকে জল বের করা হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, শনিবার সকালে শ্রীশৈলম লেফট ব্যাঙ্ক ক্যানেল (SLBC) সুড়ঙ্গের একটি অংশে ধস নামে। তাতে অধিকাংশ শ্রমিক বেরিয়ে আসতে সক্ষম হলেও আটকে পড়েন ৮ জন। তাঁদের সঙ্গে উদ্ধারকারীরা এখনও পর্যন্ত কোনও যোগাযোগ করতে পারেননি।
তেলাঙ্গানার মন্ত্রী জুপল্লি কৃষ্ণ রাও সোমবার আশঙ্কাপ্রকাশ করেছিলেন, যে আটকে পড়া শ্রমিকদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। তিনি বলেছিলেন, সুড়ঙ্গের ভিতরে অনেক উঁচু পর্যন্ত কাদার স্তর জমে রয়েছে। যার ফলে হাঁটাচলা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। উদ্ধারকারীরা চলাচলের জন্য রাবার টিউব এবং কাঠের কাঠামো ব্যবহার করছেন।
তিনি আরও জানিয়েছিলেন, যে ২০২৩ সালে উত্তরাখণ্ডের সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আটকে পড়া নির্মাণ শ্রমিকদের উদ্ধারকাজে যে দল ছিল তারাও ইতিমধ্যে যোগ দিয়েছেন উদ্ধার কাজে। এই ঘটনায় মোট ৯টি জাতীয় সংস্থা উদ্ধার অভিযানে কাজ করছে। মুখ্যমন্ত্রী রেভন্থ রেড্ডি প্রতি ঘণ্টায় তথ্য নিচ্ছেন।