আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তারপরই এই হাসপাতালের দুর্নীতি সামনে এসেছে। এমনকী দুর্নীতির অভিযোগে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টে হয়েছে শুনানি। এখানে পুলিশের পক্ষ থেকে টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বলে বিষয়টি উত্থাপিত হল। আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে বিষয়টি উল্লেখ করেন। আর নবান্ন থেকে প্রশাসনিক বৈঠকে এই বিষয়ে নিজের বক্তব্য তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরজি কর হাসপাতালে যে ঘটনা ঘটেছে তার পর একমাস কেটে গিয়েছে। জাস্টিস মেলেনি। ইতিমধ্যেই রাস্তায় উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগান তুলে প্রতিবাদ আন্দোলনে নেমে পড়েছেন জুনিয়র ডাক্তার থেকে শুরু করে নাগরিক সমাজ। আজ, সোমবার শুনানিতে সলিসেটর আইনজীবী প্রথমে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বিকৃত করার অভিযোগ তোলেন। তাতে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন বলেন, ‘ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পাশাপাশি আরও একটি বিষয় উল্লেখ করতে চাই। নিগৃহীতার পরিবার টাকার অফার করা হয়েছিল।’ আর নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘অনেকে বলছেন আমি নির্যাতিতার পরিবারকে টাকা দেওয়ার কথা বলেছি। সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা। অপপ্রচার করা হচ্ছে। আমি জানি কখন কি বলতে হয়। আমি বলেছিলাম যদি আপনারা কখনও মেয়ের স্মৃতিতে কিছু করতে চান, জানাবেন সরকার আপনাদের পাশে আছে।’
আরও পড়ুন: জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যাহত, মুখ্যমন্ত্রীকে তথ্য দিলেন স্বাস্থ্য সচিব
আরও পড়ুন: ‘আমি নির্যাতিতার পরিবারকে টাকার কথা বলিনি’, নবান্ন থেকে সাফ জানালেন মমতা
আরজি কর হাসপাতাল কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। তারপর সিবিআই তদন্তভার নেওয়ায় তাদের হাতে যায়। সন্দীপ ঘোষ গ্রেফতার হয়েছেন আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে। সেক্ষেত্রে এই ধর্ষণ–খুনে অভিযুক্ত একজনই। এবার বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের কথা শুনে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এই বিষয়ে আলাদা করে স্টেটাস রিপোর্ট দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এটা এই মামলারই অংশ। ওপেন কোর্টে কিছু মন্তব্য করতে চাই না। যাতে তদন্তে প্রভাব পড়ে। আগামী সোমবার তদন্তের আবার স্টেটাস রিপোর্ট দিন।’
আজ সুপ্রিম কোর্টে আন্দোলনরত ডাক্তারদের কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে। আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে কাজে ফিরতে বলেছেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘আপনাদের সব দাবিই মেনে নেওয়া হয়েছে। আসুন না, কথা হবে, আলোচনা হবে। আমরা তো কথা বলতে প্রস্তুত। আমি সিবিআইকে বলছি দ্রুত তদন্ত করে বিচার দিন নির্যাতিতাকে। এখন আমাদের হাতে কিছু নেই। সবটাই সিবিআইয়ের হাতে আছে। তাই জুনিয়র ডাক্তারদের বলব আপনারা কাজে ফিরে আসুন। সামনে উৎসব। উৎসবে ফিরে আসুন। মানুষ যেন চিকিৎসার অভাবে মারা না যান। বলা হচ্ছে যে প্রমাণ লোপাট করার জন্যই নাকি ওই ঘর ভাঙা হয়েছে। এভিডেন্স লোপাট আমি করতে যাব কেন? কাকে বাঁচানোর জন্য? কেউ আমার বন্ধু নয়, কেউ আমার শত্রু নয়।’