‘মামলার নিষ্পত্তির থেকে বেশি সময় বিচারক নিয়োগে ব্যয় করছেন কলেজিয়ামের বিচারপতিরা।’ আরএসএস-এর অনুষ্ঠানে কলেজিয়ামের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু। বিচারপতিদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ কলেজিয়াম পদ্ধতিতে খুশি নয় এবং সংবিধানের চেতনা অনুযায়ী বিচারক নিয়োগ করা সরকারের কাজ।’
সোমবার আহমেদাবাদে আরএসএস-র প্রকাশিত সাপ্তাহিক পত্রিকা 'পাঞ্চজন্য'র আয়োজিত 'সবরমতি সংবাদ' নামক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে রিজিজু বলেন, ‘আমি দেখেছি যে বিচারকদের নিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অর্ধেক সময় ব্যস্ত থাকেন বিচারপতিরা। এর কারণে তাঁদের প্রাথমিক কাজ - ন্যায়বিচার প্রদান ব্যাহত হয়।’ রিজিজু আরও বলেন, ‘ভারত ছাড়া বিশ্বের কোথাও এমন প্রথা নেই যে বিচারকরা তাদের ভাইদের বিচারক হিসেবে নিয়োগ করছেন। আইনমন্ত্রী হিসেবে আমি লক্ষ্য করেছি যে বিচারকদের অর্ধেক সময় এবং মন পরবর্তী বিচারক কে হবেন তা নির্ধারণে ব্যস্ত থাকে। তাদের প্রাথমিক কাজ ন্যায়বিচার দেওয়া। যা এই প্রথার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ভারতের প্রধান বিচারপতির সাথে পরামর্শ করেই আইন মন্ত্রণালয় দেশের প্রতিটি বিচারককে নিয়োগ করত। তখন আমাদের অনেক নামকরা বিচারক ছিলেন। এ বিষয়ে সংবিধান স্পষ্ট। এতে বলা হয়েছে যে ভারতের রাষ্ট্রপতি বিচারক নিয়োগ করবেন। তার মানে আইন মন্ত্রণালয় ভারতের প্রধান বিচারপতির সাথে পরামর্শ করে বিচারক নিয়োগ করবে।’
রিজিজুর কথায়, ‘জনগণ নেতাদের মধ্যে রাজনীতি দেখতে পায়, কিন্তু বিচার বিভাগের ভেতরে যে রাজনীতি চলছে তা তারা জানে না। যদি একজন বিচারক অন্য বিচারক নির্বাচনের সাথে জড়িত না হন তাহলে তিনি সমালোচনার ঊর্ধ্বে থাকবেন। কিন্তু প্রশাসনিক কাজে যুক্ত হলে তিনি সমালোচনার ঊর্ধ্বে নন। আমাদের তিনটি স্তম্ভ আছে- নির্বাহী বিভাগ, আইনসভা এবং বিচার বিভাগ। বিচার বিভাগের দ্বারা আবদ্ধ এবং নিয়ন্ত্রিত হয় নির্বাহী বিভাগ এবং আইনসভা। কিন্তু বিচার বিভাগ বিপথে গেলে তা নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থা নেই।’