বিশ্ব অর্থনীতিকে স্বস্তি দিতে খনিজ তেল সরবরাহকারী দেশগুলি একটু সরবরাহ বৃদ্ধি করুক। রিয়াধের কাছে এমনটাই দাবি করেছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু সেই দাবিতে কর্ণপাত করা হয়নি OPEC দেশগুলির তরফে। প্রতিবাদস্বরূপ আগামী মে মাসে সৌদি আরবের থেকে তেল আমদানি কমানোর সিদ্ধান্ত নিল ভারত।
ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, মধ্য প্রাচ্যের অপরিশোধিত তেলের উপর নির্ভরতা কমানোও মোদী সরকারের লক্ষ্য। তাই শুধু প্রতিবাদ নয়, এটা ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার প্রচেষ্টাও বটে। প্রায় এক-চতূর্থাংশ কম তেল কেনা হবে সৌদি আরবের থেকে।
ইন্ডিয়ান অয়েল, ভারত পেট্রোলিয়াম, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম ও ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি মে মাসে এই নীতি মেনেই অপরিশোধিত তেল আমদানি করবে বলে সূত্রের খবর।
দেশীয় পরিশোধনাগারগুলির উপর ভারতের দৈনিক পেট্রোপণ্য চাহিদার ৬০% নির্ভরশীল। প্রতি মাসে সৌদি আরব থেকে প্রায় ১ কোটি ৪৭ লক্ষ ব্যারেল ক্রুড অয়েল কেনে ভারত। এবার তা কমানো হবে। নামিয়ে আনা হবে ১ কোটি আট লক্ষ ব্যারেলের কাছাকাছি।
গোটা বিশ্বে চাহিদার নিরিখে সংখ্যাটা কম মনে হতে পারে। কিন্তু মনে রাখা প্রয়োজন যে, ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম খনিজ তেল আমদানিকারী দেশ। একই সঙ্গে তৃতীয় বৃহত্তম ব্যবহারকারীও। ভারত পেট্রোপণ্যের এই বিপুল চাহিদার ৮০%-ই যোগান দেয় সৌদি আরব। ফলে হঠাত্ আমদানি কমলে সেই ঘাটতি যে সৌদি আরব অনুভব করবে, তা নিশ্চিত।
গত কয়েক মাস ধরে সমানে বাড়ছে অপরিশোধিত তেলের দাম। বিভিন্ন মিশাইল হানা ও অন্যান্য কারণ বললেও, এই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে সরবরাহে অনীহার মাধ্যমে চাহিদা সৃষ্টির অভিযোগ করছেন কেউ কেউ।
একই অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় জ্বালানি তেল মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। তিনি OPEC অন্তর্ভুক্ত দেশগুলিকে সরবরাহ স্বাভাবিক করতে অনুরোধ করেন। তিনি মূল্যবৃদ্ধির পেছনে সৌদি আরবের সরবরাহ বন্ধ রেখে চাহিদা বৃদ্ধির নীতিকে দায়ী করেন।
অন্যদিকে ভারতের কথা অগ্রাহ্য করেছে OPEC দেশগুলি। আগামী এপ্রিল পর্যন্ত পরিস্থিতি এরকমই রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তেল সরবরাহকারী দেশগুলি।