ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং তখন ছিলেন ভারতের অর্থমন্ত্রী। সালটা ১৯৯১। ৩০ বছর আগে মনমোহন সিং নেওয়া সিদ্ধান্তের পরই ধীরে ধীরে ভারত ৩ ট্রিলিয়ন ডলার পরিমাণের অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। তবে ১৯৯১ সালের সেই অর্থনৈতিক সংকটের থেকে বড় সংকট ভারতের সামনে দাঁড়িয়ে আছে বলে আশঙ্কাবাণী শোনালেন মনমোহন সিং। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর দাবি, দেশের সকল দেশবাসীর সুখ স্বাচ্ছন্দ সুনিশ্চিত করতে ভারতকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে হবে।
করোনা আবহে ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে তিনি মর্মাহত বলে জানিয়েছেন মনমোহন সিং। ১৯৯১ সালে ভারতের অর্থনৈতিক দিক নির্দেশনা বদলের আজ ৩০তম বার্ষীকি। সেই উপলক্ষে মনমোহন সিং বলেন, 'স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা খাতে ভারত অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে। এগুলি সামাজিক উন্নয়নের সূচক। আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা খাত এগিয়ে যেতে পারেনি। অনেক জীবন এবং অনেকের জীবিকা হারিয়েছে। এই জীবন ও জীবিকা হারানো উচিত ছিল না।'
ভারতীয় অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারকরতে ১৯৯১ সালে উদারনীতি গ্রহণ করা হয় পিভি নরসিমহার সরকারের পক্ষ থেকে। লাইসেন্স কোটা রাজ থেকে ভারতীয় অর্থনীতিকে মুক্ত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। অর্থনৈতিক সংস্কার করা হয়। ১৯৯১ সালের ২৪ জুলাই সেই লক্ষ্যে যাগান্তকারী বাজেট পেশ করেছিলেন তত্কালীন অর্থমন্ত্রী মনমোহন সিং।
মনমোহন সিং বলেন, 'সেই পদক্ষেপের ফলেই ভারত বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে অন্যতম হয়ে উঠেছে। ৩০০ মিলিয়ন ভারতীয় দারিদ্র্য সীমার থেকে উঠে এসেছে। কয়েকশো মিলিয়ন ভারতীয়র যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান হয়েছে। তবে সামনের দিকে ভারতের জন্য ১৯৯১ সালের থেকেও কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হবে। তাই এই সময় উত্সব, আনন্দ করার নয়। তবে আত্মসমীক্ষার।'
তিনি বলেন, '১৯৯১ সালের সেই উদার নীতির পদক্ষেপ একটি অর্থনৈতিক সংকটের জেরে হয়েছিল। তবে সেই পদক্ষেপ শুধুমাত্র সংকট মোচনের লক্ষ্যে ছিল না। ভারতকে ভবিষ্যতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। আমাদের কার্য ক্ষমতার উপর বিশ্বাস রেখেই ভারত সরকার সেই পদক্ষেপ নিয়েছিল। সেই পদক্ষেপের দিকে এখন তাকালে বেশ আনন্দ এবং গর্ব হয়।'