করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে মহামারীর আকার ধারণ করেছে, এই কঠিন পরিস্থিতে সংক্রমণের আশঙ্কায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিশ্বের বেশিরভাগ স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘরগুলি। সেই তালিকায় রয়েছে নেদ্যালন্যাল্ডের অ্যামস্টারড্যামের সিঙ্গার লরেন সংগ্রহশালা। আর এই সুযোগেই সংগ্রহশালার কাঁচের দরজা ভেঙে একদল দুষ্কৃতী গঘের আঁকা ছবি নিয়ে পালিয়ে যায়। ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য গার্ডিয়ান সূত্রে খবর, স্থানীয় সময় রবিবার রাত ৩.১৫ নাগাদ এই ঘটনাটি ঘটেছে। জানা যাচ্ছে ভ্যান গঘের আঁকা বহুমূল্য ‘পার্সোনেজ গার্ডেন অ্যাট নিউনেন ইন স্প্রিং' ছবিটি চুরি গিয়েছে। ১৮৮৪ সালে সেই ছবিটি এঁকে ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত এই ডাচ চিত্রকর। ১০X২২ ইঞ্চি-র এই ছবিতে পেপারের মধ্যে ওয়েল রঙের ব্যবহারে এক অভূতপূর্ব সৌন্দর্য তুলে ধরেছেন উনবিংশ শতাব্দীর বিশ্ববিখ্যাত চিত্রকর ভিনসেন্ট ভ্যান গঘ। ছবিতে বাগনের মধ্যে একাকী দাঁড়িয়ে রয়েছে এক মানুষ, দূরে দেখা যাচ্ছে একটি চার্চ।
১২ মার্চ থেকে গোটা নেদারল্যান্ড শহর জুড়ে সব জাদুকর, প্রদর্শনী, সংগ্রহশালা বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় সরকার। সেই সময় সিঙ্গার লরেনে ' মিররস অফ সোল' নামে প্রদর্শনীটি চলছিল। নেদারল্যান্ডের গ্রোনিনজেন মিউজিয়াম থেকে এই ছবিটি ধার নিয়ে প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছিল সিঙ্গার লরেন সংগ্রহশালায়। ঘটনায় বেজায় চটেছে গ্রোনিনজেন মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ। ইনস্টাগ্রামে তাঁরা জানিয়েছেন,’ ভ্যান গঘের আঁকা বহুমূল্য ‘পার্সোনেজ গার্ডেন অ্যাট নিউনেন ইন স্প্রিং' ছবিটি চুরি হয়ে যাওয়ার ঘটনায় আমরা হতভম্ব। গ্রোনিনজেন মিউজিয়ামের সংগ্রহে থাকা ভ্যান গঘের অন্যতম চিত্র এটি। গতকাল রাতে সিঙ্গার লরেন সংগ্রহশালা থেকে এটি চুরি হয়ে যায়। আমরা আশা করছি শীঘ্রই এটা উদ্ধার করা সম্ভব হবে। এবং সকলে সেই চিত্রের সৌন্দর্য আবারও উপভোগ করতে পারবে। দয়া করে এই চুরি যাওয়া চিত্রটির ছবি ছড়িয়ে দিন, যাতে দ্রুত সেটি উদ্ধার সম্ভব হয়’।
সিঙ্গার লরেন সংগ্রহশালার ডিরেক্টর জাঁ রুডল্ফ দে লর্ম জানিয়েছেন, ‘এই ঘটনায় একদিক আমি ভীষণভাবে হতভম্ব অন্যদিকে প্রচণ্ড বিরক্ত।’ অন্যদিকে অ্যামস্টারড্যাম পুলিশ সূত্রে খবর কাঁচের দরজা ভাঙার সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় পুলিশ থানায় এল্যার্ম বেজে উঠে, তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগেই দুষ্কৃতীরা ওই দামী চিত্রটি নিয়ে চম্পট নেই। তবে আশার কথা অন্য কোনও চিত্রই সংগ্রহশালা থেকে চুরি যায়নি। এর আগে ২০০৭ সালে এই সংগ্রহশালা থেকে সাতটি ভাস্কর্য চুরি গিয়েছিল।