জমি কেনাবেচার ঘটনায় অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ (মঙ্গলবার - ১৫ এপ্রিল, ২০২৫) দিল্লিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর অফিসে হাজিরা দিলেন কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢ়রার স্বামী তথা ব্যবসায়ী রবার্ট বঢরা।
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, ইডি-র কাছ থেকে এই জিজ্ঞাসাবাদের হাজিরা সংক্রান্ত সমন পাওয়ার ঠিক একদিন আগেই রবার্ট জানিয়েছিলেন, যদি কংগ্রেস চায়, তাহলে তিনি রাজনীতির ময়দানে নামতে প্রস্তুত। তিনি বলেছিলেন, কংগ্রেস নেতৃত্ব চাইলে তিনি তাঁর পরিবারের আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে রাজনীতিতে যোগ দেবেন।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, হরিয়ানা গুরুগ্রামের শিকোহপুর গ্রামে একটি জমি কেনাবেচা নিয়ে রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনাতেই জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য এদিন তাঁকে ডেকে পাঠায় ইডি।
সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের দাবি, নির্দিষ্টভাবে এই মামলাটিতে তাঁকে এই প্রথম তাঁদের সংস্থার তরফে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হল। ২০১৮ সালে হরিয়ানা পুলিশ এই ঘটনায় যে এফআইআর দায়ের করেছিল, তার ভিত্তিতেই এই তলব বলে জানা গিয়েছে। ইডি তার তদন্তও শুরু করেছে সেই এফআইআর-এর ভিত্তিতেই।
এদিন ইডি অফিসে পৌঁছে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বঢরা। তাঁদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তিনি আশা করছেন যে - 'আজই বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়ে যাবে।' কারণ - 'এই মামলার কোনও সারবত্তা নেই'।
এই ইডি তলবের জন্য সরাসরি বিজেপিকে দায়ী করেছেন রবার্ট। তাঁর মতে, এটি একেবারেই একটি 'রাজনৈতিক চক্রান্ত'। যার নেপথ্যে রয়েছে বিজেপি। যাতে তিনি প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যোগ দিতে না পারেন, তার জন্যই এই চক্রান্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রবার্ট।
সংবাদ সংস্থা এএনআই অনুসারে এদিন রবার্ট বলেন, 'আমরা ইডি-কে বলেছি যে - আমাদের নথিপত্র সব প্রস্তুত করছি। আমি যেকোনও সময়ে এখানে আসার জন্য তৈরি। আশা করছি, আজই একটি সমাধানসূত্র বের হবে। এই মামলার কোনও সারবত্তা নেই। আমি যখনই আমাদের দেশের স্বার্থে কোনও কথা বলি, আমাকে আটকে দেওয়া হয়। রাহুলকে (গান্ধী) সংসদে বলতে দেওয়া হয় না। চুপ করিয়ে দেওয়া হয়। বিজেপিই এসব করছে। এটি একেবারেই রাজনৈতিক চক্রান্ত। মানুষ আমাকে ভালোবাসেন। তাঁরা চান, আমি রাজনীতিতে আসি।'
এরপরই রবার্ট বলেন, 'আমি যখনই বললাম যে আমি রাজনীতিতে যোগ দিতে চাই, সঙ্গে সঙ্গে ওরা পুরোনো মামলা ফের খুঁচিয়ে তুলল। যাতে আমাকে আটকানো যায় এবং মূল ইস্যুগুলি থেকে নজর ঘোরানো যায়। এই মামলার কোনও ভিত্তি নেই। গত ২০ বছরে আমাকে ১৫ বারেরও বেশি সমন পাঠানো হয়েছে এবং প্রত্যেকবারই ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ২৩,০০০ নথি প্রস্তুত করা তো সহজ কাজ নয়।'
প্রসঙ্গত, এই পুরো ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছে ২০০৮ সালের একটি আর্থিক লেনদেন। যেটা করা হয়েছিল - ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। শিকোহপুর গ্রামে ওঙ্কারেশ্বর প্রপার্টিজ নামে এক সংস্থার কাছ থেকে ৩.৫ একরের একটি জমি ৭.৫ কোটি টাকার বিনিময়ে কিনেছিল রবার্ট বঢরার সংস্থা - স্কাইলাইট হসপিট্যালিটি প্রাইভেট লিমটেড। অভিযোগ হল, সেই জমির মিউটেশন করানো হয়েছিল - মাত্র ২৫ ঘণ্টার মধ্যে।