ঘোর বিপাকে পড়েছে নরওয়ের রাজ পরিবার। কারণ, সেদেশের বর্তমান রাজকুমারী তথা পরবর্তী রানির ছেলের বিরুদ্ধেই উঠেছে একাধিক ধর্ষণ এবং নির্যাতনের অভিযোগ। যা কিনা নরওয়ের রাজ পরিবারের 'বৃহত্তম কেলেঙ্কারি' বলে দাবি করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
যাঁকে ঘিরে এই কেলেঙ্কারি, তিনি হলেন ২৭ বছরের ম্যারিয়াস বর্গ হোইবি। তাঁর হলেন মা রাজকুমারী মেট্টে-ম্যারিট। রাজকুমার হাকোনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আগেই একটি প্রেমের সম্পর্কের জেরে হোইবিকে জন্ম দেন ম্যারিট।
আপাতত রাজকুমারীর সেই সন্তান বিস্তর আইন জালে জড়িয়ে পড়েছেন। কেলেঙ্কারির কারণে গত অগস্ট মাস থেকেই দেশ ও বিদেশের সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে জায়গা করে নিচ্ছেন এই যুবক।
গত ৪ অগস্ট ওসলো শহর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ ছিল, আগের রাতে বান্ধবীকে হেনস্থা করেছেন তিনি। এই ঘটনার ঠিক পরেই সংবাদমাধ্যমে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে।
সেই ছবিতে দেখা যায়, ওই তরুণী যে অ্য়াপার্টমেন্টে থাকেন, সেই বাড়ির দেওয়ালে একটি ছুরি পোঁতা রয়েছে! সেই ছবির সঙ্গে যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, তাতে দাবি করা হয়, হোইবি পুলিশের হাতে একটি ভাঙাচোরা মোবাইল তুলে দিয়েছেন। যার মধ্যে কোনও সিম কার্ড ছিল না।
এর কিছু দিন পর হোইবি স্বীকার করেন, তিনি তাঁর বান্ধবীকে হেনস্থা করেছিলেন। তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে একটি লিখিত বিবৃতি পাঠান। যেখানে তিনি দাবি করেন, ঘটনার সময় তিনি নেশা করে ছিলেন। এবং এসবই আসলে কোকেন সেবন এবং মদ্যপানের প্রভাবে ঘটেছিল।
এমনকী, রাজকুমারীর ছেলে এও জানান যে দীর্ঘদিন ধরেই তিনি মানসিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন ।
সংবাদমাধ্যমের তরফে বারবার দাবি করা হয়েছে যে হোইবির সঙ্গে নাকি অপরাধ জগতের লোকজনের বন্ধুত্ব রয়েছে। হোইবির দু'জন সৎ ভাইবোনও রয়েছেন। তিনি তাঁদের সঙ্গেই বড় হয়েছেন। কিন্তু, আনুষ্ঠানিকভাবে রাজ পরিবারের কোনও কিছুতেই তাঁর কোনও ভূমিকা নেই।
এদিকে, হোইবির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হতেই তাঁর দুই প্রাক্তন বান্ধবী দাবি করেন, তাঁরাও অতীতে হোইবির হাতে নিগৃহীত হয়েছেন। অগস্ট থেকে শুরু হওয়া এই ঘটনাক্রম ডিসেম্বরে আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে।
ইতিমধ্যেই হোইবির বিরুদ্ধে যেসমস্ত অভিযোগ উঠেছে, তা হল - খুনের হুমকি, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা, দু'টি ধর্ষণ এবং আরও একটি সম্ভাব্য যৌন নির্যাতন।
গত নভেম্বর মাসে যখন হোইবির বিরুদ্ধে প্রথম ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়, তখনই এক সপ্তাহ পুলিশ হেফাজতে থাকতে হয় তাঁকে। যা নরওয়ের রাজ পরিবারের কোনও সদস্যের ক্ষেত্রে নজিরবিহীন ঘটনা।