শুধু প্রচলিত কৃষি ব্যবস্থা নয়। প্রাণীসম্পদ বা পশুপালনের মতো ক্ষেত্রকে উজ্জীবিত করতে একাধিক প্রকল্পের ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। একইসঙ্গে গবাদি পশুদের রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ করলেন।
শুক্রবার ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের তৃতীয় দফার ঘোষণায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানান, লকডাউনের সময় দেশে দুধের চাহিদা ২০-২৫ শতাংশ কমে গিয়েছিল। সেজন্য আগে যেখানে বিভিন্ন সমবায় কেন্দ্রগুলি দৈনিক ৩৬০ লাখ লিটার দুধ নিত, তা লকডাউনের সময়ে ৫৬০ লাখ লিটার নেওয়া হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত যে ১১১ কোটি লিটার অতিরিক্ত দুধ কেনা হয়েছে, তাতে ডেয়ারি শিল্পের ৪,১০০ কোটি টাকা আয় হয়েছে। অর্থাৎ ৪,১০০ কোটি টাকা ক্ষতির মুখ থেকে রেহাই পেয়েছে ডেয়ারি শিল্প।
দেশের ডেয়ারি শিল্পের বর্তমান অবস্থা নিয়েও আশাবাদী কেন্দ্র। সীতারামন জানান, দেশের যে জায়গাগুলিতে বেশি দুধ উৎপাদন হয়, সেখানে বেসরকারি বিনিয়োগের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। দুগ্ধজাত দ্রব্যের প্রক্রিয়াকরণ, গবাদি পশুর খাবার মতো ক্ষেত্রে বেসরকারি লগ্নিতে সাহায্যে করা হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। সেজন্য ১৫,০০০ কোটি টাকার একটি প্রাণীসম্পদ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল তৈরির করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, দুগ্ধজাত সামগ্রী রফতানি ও উৎপাদন শিল্পে ইনসেনটিভের ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী।
গবাদি পশুদের স্বাস্থ্যের উপরও বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। ক্ষুরা রোগ ও মুখের রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য ১৩,৩৪৩ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে বলে জানান সীতারামন। সেই প্রকল্পের আওতায় দেশের ১০০ শতাংশ অর্থাৎ ৫৩ কোটি গবাদি পশুর টিকাকরণ করা হবে। সেই তালিকায় রয়েছে গরু, ষাঁড়, ছাগল এবং শুয়োরের মতো পশু। কেন্দ্রের দাবি, ইতিমধ্যে ১.৫ কোটি গরু ও ষাঁড়কে চিহ্নিত করে টিকাকরণের কাজ হয়ে গিয়েছে।
মৌমাছি পালনের মতো ক্ষেত্রকেও বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী জানান, মৌমাছি পালনের জন্য ৫০০ কোটি বরাদ্দ করা হচ্ছে। মধু সংগ্রহ, পরিকাঠামো উন্নয়ন, মধু সংরক্ষণ কেন্দ্র, বাড়তি উৎপাদন, মৌমাছি পালনকারীদের মান উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প চালু করা হবে। সীতারামন দাবি করেন, কেন্দ্রের প্রকল্পের ফলে দু'লাখ মধু সংগ্রহকারী উপকৃত হবেন এবং আমজনতা যে মধু পান, তার মানও বাড়বে। একইসঙ্গে মৌমাছি পালনের ক্ষেত্রে মহিলাদের ক্ষমতায়নের উপর বাড়তি জোর দেওয়া হবে বলে জানান কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।