ইতিমধ্যেই তিন দফায় মার্কিন মুলুক থেকে ভারতীয় অবৈধবাসীদের নিয়ে সামরিক বিমান এসেছে ভারতের অমৃতসরে। এর মধ্যে দ্বিতীয় বিমানটিতে ছিলেন পঞ্জাবের ৬৫ জন। আর রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ৬৫ জন আমেরিকায় যাওয়ার জন্যে মানব পাচারকারীদের কোটি কোটি টাকা দিয়েছিলেন। কেউ নিজের জমি বিক্রি করে, কেউ নিজের বাড়ি বন্ধক রেখে দালালদের টাকা দিয়ে অবৈধ উপায়ে আমেরিকায় পাড়ি দিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে এই ৬৫ জন ২৭.৫ কোটি টাকা দালালদের দিয়েছিলেন আমেরিকায় পৌঁছে দেওয়ার জন্যে। (আরও পড়ুন: 'মনে হল যেন ট্রেন দুর্ঘটনা...', ভূমিকম্পে কাঁপল দিল্লি, আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ)
আরও পড়ুন: ইউনুসের বাংলাদেশে 'বিপ্লবীরা' নারীবিদ্বেষী? বিস্ফোরক 'হাসিনা বিরোধী' ছাত্রীরাই
হিন্দুস্তান টাইমসের রিপোর্ট অনুযায়ী, দ্বিতীয় বিমানে করে আমেরিকা থেকে ফেরত আসা অবৈধবাসীদের মধ্যে ১১ জন ছিলেন গুরুদাসপুরর। এদিকে কপুরথলার ১০ জন অবৈধবাসী ফিরে আসেন সেই উড়ানে। হোশিয়ারপুরেরও ৯ জন ছিলেন সেই বিমানে। রিপোর্ট অনুযায়ী, মহালির এক দম্পতি আমেরিকায় পৌঁছাতে দালালকে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। পঞ্জাবের বাকি অবৈধবাসীরা কম-বেশি মাথা পিছু ৫০ লাখ টাকার মতো দিয়েছিলেন আমেরিকায় পৌঁছতে। এই সব দালালরা পঞ্জাব, হরিয়ানা এমনকী দুবাই থেকে কাজ চালায়। ভারতে ফিরে এসে এই অবৈধবাসীরা দাবি করেন, এত টাকা দেওয়া সত্ত্বেও তাঁদের দক্ষিণ আমেরিকার গভীর জঙ্গল পার করে মেক্সিকো হয়ে আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া হয়। (আরও পড়ুন: সীমান্তে কাঁটাতার জট কাটবে? বাংলাদেশি উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জয়শংকর)
আরও পড়ুন: 'প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে', যৌথ অর্থনীতি গড়ে তুলতে ভারতের হাত ধরার বড় বার্তা ইউনুস
হিন্দুস্তান টাইমসকে জলন্ধরের এক যুবক বলেন, 'আমি এক এজেন্টকে ৪৫ লাখ টাকা দিয়েছিলাম। সে দাবি করেছিল যে সব বৈধ নথি করিয়ে দেবে। তবে আমি মেক্সিকো পৌঁছানোর পরে বুঝতে পারি যে আমি ফাঁদে পড়েছি। আর কিছু করার নেই। এরপর আমি ধরা পড়ি। কয়েকমাসের কষ্টের পর আমাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।' এমনই ভাবে এত লাখ লাখ টাকা দালালদের দেওয়ার পরে অধিকাংশ অবৈধবাসীদেরই আর্থিক স্থিতি খারাপ। অনেকেই দেনার দায়ে ডুবে গিয়েছে। তাঁদের 'মার্কিন স্বপ্ন' ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয়বারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে ফেরার পর থেকেই 'অবৈধ অভিবাসন' এবং অনুপ্রবেশের মতো ইস্যু নিয়ে রণংদেহী মূর্তি ধারণ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই আবহে ক'দিন আগেই কলম্বিয়া সহ বেশ কিছু দেশে 'অবৈধ অভিবাসীদের' ফিরিয়ে দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। এদিকে অবৈধ অভিবাসীদের সামরিক বিমানে করে ফেরত পাঠানোর বেশ কিছু ছবি সম্প্রতি প্রকাশ করেছিল হোয়াইট হাউজ। তাতে দেখা গিয়েছিল, মানুষকে সারিবদ্ধ করে বিমানে তোলা হচ্ছে। তাঁদের সকলের কোমরে বাঁধা রয়েছে চেন। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। এই নিয়ে ভারতে ব্যাপক হৈচৈয়ের পর নয়াদিল্লি নির্বাসিতদের সঙ্গে আচরণের বিষয়ে ওয়াশিংটনকে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিল। এদিকে সম্প্রতি মার্কিন সফরে গিয়ে ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে মোদী বলেছিলেন, 'যারা অন্য দেশে অবৈধভাবে বসবাস করছে তাদের সেখানে থাকার অধিকার নেই। ভারত ও আমেরিকার ক্ষেত্রে আমরা আগেও বলেছি যে, যারা সত্যিই ভারতীয় এবং আমেরিকায় অবৈধভাবে থাকছেন, তাদের ফিরিয়ে নিতে ভারত তৈরি।'