'হিংসাত্মক বিক্ষোভ কেবল অরাজকতা সৃষ্টি করে।' সম্প্রতি বাংলাদেশ-নেপালে জেন জি আন্দোলন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ প্রধান মোহন ভাগবত। গত বছরে বাংলাদেশ এবং সম্প্রতি নেপাল, ভারতেই দুই প্রতিবেশী দেশেই আন্দোলনের আঁচে পুড়েছে। যার জেরে পতন হয়েছে নির্বাচিত সরকারের। আর এই আবহে ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিলেন আরএসএস প্রধান।
আরও পড়ুন-স্বাধীনতা আন্দোলনে জেলেও গিয়েছিলেন RSS-র নেতা! সংঘের শতবর্ষে আবেগঘন মোদী
বৃহস্পতিবার অর্থাৎ বিজয়া দশমীতে আরএসএস-এর শতবর্ষ পূর্তি হল। সেই উপলক্ষে নাগপুরে আরএসএস সদর দফতরের একটি অনুষ্ঠানে মোহন ভাগবত বলেন, 'আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলি শুধুমাত্র প্রতিবেশী নয়, তারা আমাদের নিজেদের। তাদের সঙ্গে আমাদের সখ্যতা রয়েছে। সেখানে যে অস্থিরতা চলছে তা উদ্বেগের বিষয়। আমাদের শিখতে হবে যে পরিবর্তন কেবল গণতান্ত্রিক উপায়েই সম্ভব। তথাকথিত বিপ্লবগুলি উদ্দেশ্য অর্জন করে না, বরং বহিরাগত শক্তির স্বার্থ রক্ষা করে।' এরপরেই তিনি সতর্ক করে বলেন, এই ধরণের বহিরাগত শক্তি ভারতে তাদের শক্তি বৃদ্ধি করছে। বিশ্ব আশাবাদী যে ভারত এর সমাধান খুঁজে পাবে। মানুষ শারীরিকভাবে বিকশিত হয়, কিন্তু নৈতিকভাবে নয়। উন্নয়ন সকলের জন্য অপরিহার্য।মোহন ভাগবত আরও বলেন, বাবা সাহেব এই ধরণের আন্দোলনকে অরাজকতার ব্যাকরণ বলেছিলেন। এই ধরণের সহিংস পদ্ধতি পরিবর্তন আনে না। অস্থির বিপ্লব হয়েছে, কিন্তু কোনওটাই তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। এই প্রসঙ্গে আরএসএস প্রধান ফরাসি বিপ্লবের কথা উল্লেখ করে বলেন, নেপোলিয়ন ফ্রান্সে সম্রাট হয়েছিলেন এবং রাজতন্ত্র বহাল ছিল। কমিউনিস্ট দেশগুলি একটি পুঁজিবাদী ব্যবস্থার উপর পরিচালিত হচ্ছে, যা তাদের লক্ষ্য অর্জন করে না।
আরও পড়ুন-স্বাধীনতা আন্দোলনে জেলেও গিয়েছিলেন RSS-র নেতা! সংঘের শতবর্ষে আবেগঘন মোদী
জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও হামলার কথা উল্লেখ করে আরএসএস প্রধান বলেন, এই ঘটনা ভারতকে সতর্ক থাকতে শিখিয়েছে। মোহন ভাগবত বলেন, 'এই সন্ত্রাসী হামলায় গোটা দেশ শোকাহত এবং ক্ষুব্ধ ছিল। সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে, আমাদের সরকার এবং সশস্ত্র বাহিনী উপযুক্ত জবাব দিয়েছে। পহেলগাঁও হামলা শিখিয়েছে যে আমাদের প্রতিটি দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হওয়া উচিত, তবে আমাদের নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়ে আরও সতর্ক থাকতে হবে। এই ঘটনার পর, এটাও স্পষ্ট হয়ে গেল যে কে আমাদের প্রকৃত বন্ধু এবং কে নয়।' ভাগবত বলেন, নেপালে অস্থিতিশীলতা, নিরাপত্তার সীমার বাইরেও ভারতের উদ্বেগের কারণ হওয়া উচিত। তাঁর কথায়, 'হিন্দুধর্ম কখনোই রাষ্ট্রের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়নি। আমরা হিন্দু জাতি, এবং এটিকে জাতি, ধর্ম বা সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে বিভক্ত করা যাবে না। হিন্দু সমাজ হল বসুধৈব কুটুম্বকমের উদার আদর্শের রক্ষক।' তিনি স্পষ্ট করেন, ভারত এবং হিন্দু সমাজ বিশ্বকে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পথ দেখানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।