বুদাপেস্টের অন্যতম পুরনো ও রেস্তোরাঁ 'মহারাজা'। আপাতত রেস্তোরাঁর কর্মীরা শ্বাস নেওয়ার সময় পাচ্ছেন না। কারণ যুদ্ধ পরিস্থিতির মাঝে তাঁরা সেবা করছেন আর্তের। ইউক্রেন থেকে বুদাপেস্টে আসা ভারতীয় পড়ুয়াদের বিনামূল্যে খাবার সরবরাহে ব্যস্ত এই রেস্তোরাঁ। উল্লেখ্য, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে দেশের ফেরার লক্ষ্যে বহু ভারতীয় পড়ুয়া বুদাপেস্টের পথে পা বাড়িয়েছেন। আর তাঁরা সেখানে যেতেই তাঁদের বিনামূল্যে খাবার দিচ্ছে 'মহারাজা' রেস্তোরাঁ।
'মহারাজা' রেস্তোরাঁর মালিক কুলবিন্দর সিং ঝাম আপাতত ব্যস্ত ইউক্রেন থেকে বুদাপেস্টে জড়ো হওয়া ভারতীয় পড়ুয়াদের মুখে খাবার যোগাতে। একজন একনিষ্ঠ শিখ হিসাবে এলাকায় কুলবিন্দর সিংয়ের পরিচিতি রয়েছে। আর এমন যুদ্ধপরিস্থিতিতে তিনি বুদাপেস্টের বুকে শুরু করেছেন লঙ্গার। তিনি বলছেন, 'সেই দিনটি ছিল সোমবার। আমি বুঝতে পারিনি যে ওঁদের সংখ্যা এভাবে বেড়ে যাবে। মঙ্গলবার ছিলেন বুদাপেস্টে ৩০০ জন পড়ুয়া। বুধবার সেই সংখ্যাটা বাড়ে, বিকেলের দিকে তৈরি হয় ৮০০ জনের খাবার, রাতে আরও দেড়হাজার জন আসেন।' উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সাল থেকে বুদাপেস্টে রয়েছে এই 'মহারাজা' রেস্তোরাঁটি। ৪০ বছর ধরে সেখানের বাসিন্দা কুলবিন্দর সিং ধাম। তিনি বলছেন, উদ্ধার হওয়া পড়ুয়াদের খাবারের বন্দোবস্ত করছে ভারতীয় দূতাবাস। তবে সেখানে দেওয়া হচ্ছে স্যান্ডউইচ। এদিকে, ক্লান্ত পড়ুয়ারা গরম গরম খাবারের খোঁজ করছেন। আর সেই কারণেই এই লঙ্গারের উদ্যোগ।
কুলদীপ সিং ঝাম এই পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে , তাঁদের ভয়াহ পরিস্থিতির কথা শুনেছেন। তিনি বলছেন, বহু ভারতীয় পড়ুয়াকে সীমান্তে রুখে দিয়েছিল ইউক্রেন বাহিনী। তাঁদের বলা হয়, হাতে অস্ত্র তুলে ইউক্রেনের জন্য যুদ্ধ করতে। কিছুতেই ছাড়তে দেওয়া হচ্ছিল না ইউক্রেন। তবে শেষে তাঁরা জানান যে তাঁরা ভারতীয়। ফলে যুদ্ধ থেকে মেলে মুক্তি। অনেকেই ট্রেনে হাঙ্গেরা পৌঁছানোর জন্য রওনা দেন। এভাবেই শুরু হয় তাঁদের যুদ্ধ থেকে মুক্তির লড়াই। আর সেই লড়াইয়ের অন্যতম সহযোগী হয়ে উঠেছে বুদাপেস্টের 'মহারাজা' রেস্তোরাঁ।