২০২২ সালে ইউক্রেনের বুকে রুশ হামলায় পুতিনের আগ্রাসনের রূপ দেখে ত্রস্ত গোটা দুনিয়া। উল্লেখ্য, পরমাণু শক্তিধর এই দেশের এমন বিনা প্ররোচনায় আক্রমণের ঘটনা রীতিমতো ভয়ঙ্কর। উল্লেখ্য, ফেডারেশন অফ আমেরিকান সায়ান্টিস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালে বিশ্বের ৯ টি দেশের কাছে রয়েছে ১২,৭০০ টি পরমাণু ওয়্যারহেড। এই দেশগুলির মধ্যে ৯০ শতাংশ পরমাণু ওয়্যারহেড রয়েছে আমেরিকা ও রাশিয়ার কাছে। পরিসংখ্যান বলছে, রাশিয়ার কাছে রয়েছে ৫৯৭৭ পরমাণু ওয়্যারহেড ও ৫৪২৮ টি পরমাণু ওয়্যারহেড রয়েছে আমেরিকার কাছে।
দু'টি দেশের সেনার কাছেই রয়েছে ৪ হাজারের বেশি পরমাণু অস্ত্র। ফলে আমেরিকা ও রাশিয়ার কাছে যা পরমাণু অস্ত্র রয়েছে তা দুনিয়ার আর কোনও দেশের কাছে নেই। উল্লেখ্য, শক্তিধর দেশের নিরিখে রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে যে প্রতিযোগিতা রয়েছে তা ফের একবার উস্কানি পেয়েছে ইউক্রেনে রুশ হামলার নিরিখে। আর সেই সূত্র ধরেই ফের একবার উঠে আসছে পরমাণু শক্তি ঘিরে প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই ইউরোপের সবচেয়ে বড় পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আগুন লাগার ছবি উঠে এসেছে। ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রে আগুন লাগার ঘটনায় রাশিয়াকে দায়ী করেছে ইউক্রেন। অন্যদিকে, পরমাণু অস্ত্রকে অ্যালার্টে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুতিন। এই নিরিখে ফের একবার উঠছে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে পরমাণু শক্তির সম্ভার কতটা রয়েছে, তার প্রশ্ন।
রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী ইতিমধ্যেই এক মন্তব্যে বলেছেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরমাণু অস্ত্র দিয়ে লড়া হবে। অন্যদিকে, মার্কিনি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, আমেরিকার বাসিন্দাদের পরমাণু যুদ্ধ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। উল্লেখ্য, জানা গিয়েছে, বিশ্ব জুড়ে যতগুলি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে, তার বেশিরভাগই লড়াকু বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র বা যুদ্ধজাহাজের মাধ্যমে নিক্ষেপ করা যায়। বিশ্বে ৯৪০০ টি পরমাণু অস্ত্রের মধ্যে ৩৭৩০ টি অস্ত্র আপাতত নিক্ষেপ হওয়ার জন্য তৈরি। এরমধ্যে ২ হাজার ওয়্যারহেড আমেরিকা, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্সে হাইঅ্যালার্টে থাকে। ইউরোপের বহু দেশে রয়েছে এমন পরমাণু হাতিয়ার। রিপোর্ট বলছে, চিনের কাছে ৩৫০ টি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। সেখানে ভারতের কাছে ১৬০ টি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। পাকিস্তান নিজের কাছে ১৬৫ টি পরমাণু অস্ত্র রেখেছে। উল্লেখ্য, ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ঠাণ্ডা যুদ্ধের পর থেকে বিশ্বে পরমাণু হাতিয়ারের সংখ্যায় কমতি দেখা গিয়েছে। ১৯৮৬ সালে যে সংখ্যা ৭০,৩০০ ছিল তা ২০২২ এ এসে ১২,৭০০ হয়েছে।