যাত্রীবাহী বিমানের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইউক্রেনের আকাশপথ। তার জেরে মাঝপথ থেকেই ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। যে বিমানে ইউক্রেনে আটকে থাকা প্রায় ২৫০ জন ভারতীয়কে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা ছিল। সূত্রের খবর, ইউক্রেনের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে নয়াদিল্লি। তৈরি রাখা হয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনাকে।
এয়ার ইন্ডিয়া সূত্রে খবর, ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনার জন্য কিয়েভে যাচ্ছিল বিমান এআই১৯৪৭। তারইমধ্যে যাত্রীবাহী বিমানের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় ইউক্রেনের আকাশপথ। সেই পরিস্থিতিতে ইরানের আকাশপথ থেকেই মুখ ঘুরিয়ে দিল্লিতে ফিরে আসছে এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ বিমান। তবে আগামিকাল (২৫ ফেব্রুয়ারি), শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এবং রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) যে বিশেষ বিমান কিয়েভে যাওয়ার কথা ছিল, সেগুলি যাবে কিনা, সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
ইউক্রেনে প্রায় ২০,০০০ জন ভারতীয় থাকেন। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই পড়ুয়ারা। গত কয়েকদিনে তাঁদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছিল। বৃহস্পতিবারও একটি বিমান দিল্লি বিমানবন্দরে নেমেছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে ‘সামরিক অভিযানের’ ঘোষণার জেরে পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন হয়। কিয়েভ, খারকিভের মতো ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। রাজধানী কিয়েভে বেজে ওঠে সাইরেন। সেই পরিস্থিতিতে যাত্রীবাহী বিমানের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় ইউক্রেনের আকাশপথ।
'সেফ এয়ারস্পেস'-এর তরফে জানানো হয়েছে, আপাতত ইউক্রেনের আকাশপথে যাত্রীবাহী বিমানকে নিশানা করার আশঙ্কা আছে। এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলে (এটিসি) সাইবার হামলার আশঙ্কাও রয়েছে। যা যাত্রীবাহী বিমান পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে পূর্ব ইউক্রেনে মালয়েশিয়ার এয়ারলাইন্সের এমএইচ১৭ বিমানকে নামানোর পর সংঘাতপূর্ণ এলাকার উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া নিয়ে বিমান সংস্থাগুলিকে তথ্য প্রদানের তৈরি করা হয় 'সেফ এয়ারস্পেস'।
এমনিতে বৃহস্পতিবার সকাল ছ'টার কিছুটা আগে (স্থানীয় সময়) টেলিভিশন বার্তায় পুতিন বলেন, 'আমি সামরিক অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।' ইউক্রেনের বাহিনীকে অস্ত্র ছাড়ার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়াকে পুতিন হুঁশিয়ারি দেন, যে দেশ সেই ‘সামরিক অভিযানে’ হস্তক্ষেপ করবে, তাদের ফল ভুগতে হবে। তিনি অভিযোগ করেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোয় যোগদান থেকে বিরত করার যে দাবি করছিল ক্রেমলিন, তাতে কোনও ভ্রূক্ষেপ করেনি আমেরিকা এবং বন্ধু রাষ্ট্রগুলি। সেই পরিস্থিতিতে ‘সামরিক অভিযানের’ ঘোষণা করলেও ইউক্রেন দখলের কোনও অভিপ্রায় নেই বলে দাবি করেছেন পুুতিন।