কেন ইউক্রেনে এত ছাত্রছাত্রী মেডিকেল পড়তে যান? নরেন্দ্র মোদীর জবাব, আগের সরকারের নীতিই এর জন্য দায়ী।
ইউক্রেনেই প্রায় ২০ হাজার ভারতীয় ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করতেন। বেশিরভাগই মেডিকেল বা চিকিৎসাবিজ্ঞান পড়তে গিয়েছিলেন। শুধু ইউক্রেন নয়, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া-সহ আরও অনেক দেশে পড়াশোনার জন্য প্রচুর ভারতীয় ছাত্রছাত্রীরা যান। অনেকেই মেডিকেল কলেজে পড়ার জন্য। কেন দেশ ছেড়ে এত ছাত্রছাত্রী বিদেশ পাড়ি দেন? রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর এই প্রশ্নটা খুব বেশি করে উঠছে। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীরা অনেকেই চরম দুর্দশায় পড়ার পর।
প্রধানমন্ত্রী মোদী এক্ষেত্রে দোষটা চাপিয়ে দিয়েছেন আগের সরকারগুলির উপর। বারাণসীতে ইউক্রেন থেকে দেশে ফেরা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি বলেছেন, 'আগে যদি মেডিকেল শিক্ষানীতি ঠিকভাবে নেওয়া হতো, তাহলে এই অবস্থা হত না। ছাত্রছাত্রীদের বিদেশে গিয়ে পড়তে হত না। কোনও বাবা-মা'ই বাচ্চাদের এত অল্প বয়সে বিদেশে পড়তে যেতে দিতে চান না।'
মোদী বলেছেন, 'কিছু ছাত্রছাত্রী ও তাদের পরিবার আমার কাছে তাদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। ইউক্রেনে কিছু ছাত্রছাত্রী যে কষ্টের মধ্যে, বিপদের মধ্যে পড়েছিলেন, তাতে এই ক্ষোভ হওয়া স্বাভাবিক।' মোদী বলেছেন, 'আমি তাদের রাগের কারণ বুঝতে পারি। একে মারাত্মক ঠান্ডা, তার উপর বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে তাদের এই মনোভাব যুক্তিযুক্ত।' দেশে ফিরে অনেক ছাত্রছাত্রীই তাদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। কেন সরকার আগে থেকে সক্রিয় হয়নি, সেই প্রশ্ন তুলেছেন। কিছু ছাত্রছাত্রী বিমানবন্দরে সরকারের দেওয়া গোলাপও নেননি।
তবে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, এখন আর তাঁদের মধ্যে রাগ নেই। কারণ, তাঁরা বুঝতে পারছেন কোন পরিস্থিতিতে এবং কীভাবে অপারেশন গঙ্গার মাধ্যমে তাঁদের দেশে ফেরানো হয়েছে। মোদী বলেছেন, 'অনেক ছাত্রছাত্রীই আমার কাছে সরকারের প্রশংসা করেছেন। তাঁরা যখন সব আশা হারিয়ে ফেলেছিলেন, তখন সরকার তাদের উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে এনেছে। তারা সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ।'
মোদীর বক্তব্য, 'শক্তিশালী ভারতই হল এই সব পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পাওয়ার একমাত্র রাস্তা।' তিনি ছাত্রছাত্রীদের বলেছেন, 'এই বয়সে তাঁদের যে অভিজ্ঞতা হল, তার জন্য তিনি তাঁদের প্রতি সহানুভূতিশীল।'
কেন ইউক্রেনে?
সম্প্রতি ইউক্রেন থেকে নিরাপদে দেশে ফিরেছেন মেডিকেল ছাত্রী তিয়াশা বিশ্বাস। ডয়চে ভেলেকে তাঁর মা জানিয়েছেন, তার মেয়ে ভারতে মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট পাশ করা। কিন্তু ভারতের অবস্থা হল, সরকারি মেডিকেল কলেজে সুযোগ না পেলে বেসরকারি কলেজগুলি অস্বাভাবিক অঙ্কের অর্থ দাবি করে। তার কাছে পশ্চিমবঙ্গের একটি খুবই সীমিত পরিকাঠামোর বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ৯৯ লাখ টাকা দাবি করেছিল। অন্যদিকে ইউক্রেনে পড়াতে তাদের লাগছে ৩২ লাখ টাকা। সেজন্য তাঁরা দেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজের থেকে ইউক্রেনের কলেজকেই বেছে নিয়েছেন।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য : প্রতিবেদনটি ডয়চে ভেলে থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেখেননি।)