বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > Russia-Ukraine War: ইউক্রেনেই শেষ সব স্বপ্ন, কফিনবন্দি হয়ে দেশে ফিরলেন ‘বাংলার সমৃদ্ধির’ হাদিসুর

Russia-Ukraine War: ইউক্রেনেই শেষ সব স্বপ্ন, কফিনবন্দি হয়ে দেশে ফিরলেন ‘বাংলার সমৃদ্ধির’ হাদিসুর

কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। (সৌজন্যে বিডিনিউজ টোয়েন্টি ফোর ডটকম/ডয়চে ভেলে)

পরিবারের জন্য আরও অনেক কিছু করার স্বপ্ন ছিল, তাই যত দ্রুত সম্ভব বাড়ি ফিরতে চাইছিলেন হাদিসুর৷

ইউক্রেন যুদ্ধে ওলভিয়া বন্দরে আটকে থাকা বাংলাদেশের জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধিতে রকেট হামলায় নিহত হন প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান৷ তুরস্ক এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে তাঁর মরদেহ আজ দেশে পৌঁছেছে৷

সোমবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে তাঁর কফিন ঢাকা পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তৌহিদ-উল আহসান৷

হাদিসুরের মরদেহ রবিবার দেশে পৌঁছানোর কথা থাকলেও বিরূপ আবহাওয়ায় তুরস্ক এয়ারলাইন্সের কার্গো ফ্লাইটটি বাতিল করা হয়৷ কফিনবন্দি মরদেহ বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর পরিবারের সদস্য আর স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে পরিবেশ৷

ওলভিয়া বন্দরে আটকে থাকা অবস্থায় ২ মার্চ রকেট হামলার শিকার হয় বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের মালিকানাধীন জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’৷ তাতে নিহত হন জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর৷

পরদিন ৩ মার্চ জাহাজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নাবিকদের বাংলার সমৃদ্ধি থেকে নামিয়ে আনা হয়৷ সেখান থেকে একটি শেল্টার হাউসের বাঙ্কারে ঠাঁই নেন নাবিকরা৷ হাদিসুরের মরদেহও রাখা হয়েছিল বাঙ্কারের ফ্রিজারে৷

উদ্ধার পাওয়ার তিনদিন পর দেশে ফেরার উদ্দেশে মলদোভা হয়ে ২৮ নাবিক রোমানিয়ায় পৌঁছান৷ বাঙ্কার পর্যন্ত সহকর্মীর মরদেহ নিয়ে গেলেও সেখান থেকে আর তা সঙ্গে আনতে পারেননি তাঁরা৷ রোমানিয়া থেকে গত ৯ মার্চ তাঁরা দেশে ফেরেন৷ সেদিন বিমানবন্দরে হাজির হয়েছিলেন হাদিসুরের পরিবারের সদস্যরা, তাঁরা হাদিসুরের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আকুতি জানান ৷

সরকার আর প্রবাসীদের চেষ্টায় শুক্রবার ভোরে ইউক্রেন থেকে রওনা হয়ে হাদিসুরের লাশবাহী গাড়ি রাতে প্রতিবেশি দেশ রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টে পৌঁছায়৷ সেখান থেকে তুরস্ক এয়ারওয়েজের একটি কার্গো ফ্লাইটে তার কফিন পাঠানো হয়৷

বরগুনার বেতাগির হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আবদুর রাজ্জাকের চার ছেলেমেয়ের মধ্যে হাদিসুর ছিলেন মেজো৷ চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমি থেকে পড়ালেখা শেষ করে ২০১৮ সালে এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ওঠেন৷ জাহাজের চাকরিতে বছরের একটি বড় সময় থাকতে হয় বাইরে৷ সবশেষে বাড়ি এসেছিলেন মাস ছয়েক আগে৷ তবে পরিবারের সঙ্গে কথা হত নিয়মিত৷ জাহাজে রকেট পড়ার দিনও ফোনে মা আমেনা বেগম আর ছোটো ভাই গোলাম রহমান তারেকের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল৷

হাদিসুরের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর তারেক ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, দেশে ফিরলেই বাড়ির কাজে হাত দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর ভাইয়ের৷ পরিবারের জন্য আরও অনেক কিছু করার স্বপ্ন ছিল, তাই যত দ্রুত সম্ভব বাড়ি ফিরতে চাইছিলেন হাদিসুর৷

(বিশেষ দ্রষ্টব্য : প্রতিবেদনটি ডয়চে ভেলে থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেখেননি।)

বন্ধ করুন