পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সেনা অপসারণে সম্মত হয়েছে ভারত ও চিন। দুই 'বন্ধু' দেশের মধ্যে এহেন সমঝোতা হওয়ায় খুশি রাশিয়া। সোমবার মস্কোর তরফ থেকে সরকারিভাবে ভারত-চিন বোঝাপড়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে।
ভারতে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ডেনিস অ্যালিপভ এদিন এই প্রসঙ্গে বলেন, সীমান্ত সমস্যার সঠিক সমাধান পেতে হলে সংশ্লিষ্ট দুই পক্ষকেই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হতে হবে এবং একে অপরকে বিশ্বাস করতে হবে।
উল্লেখ্য, ব্রিকস সম্মেলন চলাকালীন, গত ২৩ অক্টোবর রাশিয়ার কাজানে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তার ঠিক দু'দিন আগেই চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমঝোতায় আসে ভারত।
সংশ্লিষ্ট বৈঠকে দুই রাষ্ট্রনেতাই মেনে নেন, সীমান্তে সবকিছু স্বাভাবিক রাখতে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করতে তাঁরা প্রয়োজনীয় সমস্ত উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
এই প্রসঙ্গেই সোমবার একটি প্রেস বিবৃতি দিয়েছেন রুশ রাষ্ট্রদূত। তাতে বলা হয়েছে, 'প্রায় পাঁচ বছর পর রাশিয়ার কাজানে ভারত ও চিনের দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠক হয়েছে। আমরা তাতে খুশি এবং আমরা এই ঘটনাকে স্বাগত জানাচ্ছি। আমরা মনে করি ভারত ও চিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত ইতিবাচক পদক্ষেপ।'
অ্য়ালিপভ একথা স্বীকার করেছেন যে ভারত ও চিনের মধ্যেকার সীমান্ত সমস্য়া একটি 'অত্যন্ত জটিল বিষয়'। এবং সেই সমস্যার সমাধান করতে হলে একটি 'কঠিন ও দীর্ঘ প্রক্রিয়া'র মধ্যে দিয়ে এগোতে হবে।
একইসঙ্গে, রুশ রাষ্ট্রদূত স্মরণ করিয়ে দেন তাঁদের দেশের সঙ্গে চিনের সীমান্ত সমস্যা প্রায় ৪০ বছর ধরে চলেছিল। শেষমেশ অবশ্য দুই পক্ষই সহমতের ভিত্তিতে বিষয়টি মিটমাট করে নেয়।
এছাড়াও, একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ডেনিস অ্যালিপভ বলেন, 'ভারত এবং চিন যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের মধ্যে চলা সীমান্ত সমস্যার সমাধান করে ফেলবে, সেই বিষয়ে আমার মনে কোনও সংশয় নেই। কিন্তু, তার জন্য দৃঢ়চেতা হতে হবে। খোলা মনে সবকিছু গ্রহণ করতে হবে। পরস্পরকে বিশ্বাস করতে হবে। কারণ, সমস্যার সমাধানে সেগুলিই আসল বিষয়।'
তিনি দাবি করেন, কাজানে ভারত ও চিনের দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে যে বৈঠক হয়েছে, তাতে রাশিয়ার কোনও অবদান নেই।
অ্যালিপভ বলেন, ‘রাশিয়া সবসময়েই চায়, চিন ও ভারতের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকুক। তাদের মধ্য়ে আলোচনা চলুক। ইউরেশিয়া-সহ সমগ্র বিশ্বের পরিপ্রেক্ষিতে এটাই একমাত্র কাম্য হতে পারে।’
রুশ রাষ্ট্রদূতের দাবি, রাশিয়া মনে করে, এই মুহূর্তে এই অঞ্চলে ভারত ও চিন হল 'অন্যতম প্রধান আর্থিক চালিকাশক্তি'। তাই 'এই দুই দেশের মধ্যে সর্বদা বিশ্বাস থাকা জরুরি'।