চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের উপর আক্রমণ করে রাশিয়া। রাশিয়ার এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বদলে গিয়েছে বিশ্ব। ভ্লাদিমির পুতিনকে চাপে রেখে রাশিয়ার আগ্রাসন রুখতে নিষেধাজ্ঞার জাল বুনেছিল আমেরিকা সহ পশ্চিমা মিত্র দেশগুলি। সেই সময় ভারতকেও চাপ দিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করতে বলেছিল আমেরিকা। তবে ভারত নিজের জ্বালানির চাহিদা মেটাতে রাশিয়ার মুখাপেক্ষি হয়েছিল। সস্তায় রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কিনতে থাকে ভারত। এই আবহে এবার আমেরিকার ট্রেজারি বিভাগের তরফে অভিযোগ করা হল, রাশিয়ার অশোধিত তেল গোপনে গুজরাতে নিয়ে এসে শোধন করছে ভারতীয় জাহজ। তার পর সেই তেল জাহাজে তুলে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে অজ্ঞাত স্থানে।
আমেরিকার তরফে যে ভারতের দিকে আঙুল তোলা হয়েছে, তা মেনে নিয়েছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ডেপুটি গভর্নর মাইকেল পাত্র। তিনি বলেন, ‘তেল জাহাজে চাপিয়ে অজ্ঞাত গন্তব্যের উদ্দেশেই রওনা দিয়েছিল ওই জাহাজ। কোথায় তেল পৌঁছে দিতে হেব, তা জানা যায় মাঝ সমুদ্রে। পরে নির্দেশ অনুযায়ী সেই জাহাজ নিউ ইয়র্কে পৌঁছয়।’ এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত দিল্লির তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে আমেরিকার তরফে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে এই ঘটনায় ভারত-মার্কিন সম্পর্কে চিড় ধরতে পারে।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসে বিশ্বের সর্বোচ্চ রেল সেতু উপহার কাশ্মীরকে, রয়েছে কলকাতা যোগ
প্রসঙ্গত, ভারত আমদানির মাধ্যমেই নিজেদের জ্বালানি চাহিদা মেটায়। সৌদি আরব এবং ইরাক থেকেই সিংহভাগ তেল আমদানি করে থাকে ভারত। যদিও ইউক্রেন যুদ্ধের পর আমেরিকা রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলে সমীকরণ বদলে যায়। প্রস্তাব পেয়ে সস্তায় রাশিয়া থেকে তেল কিনতে শুরু করে ভারত। এই নিয়ে আমেরিকা ভারতকে চাপ দিলেও দিল্লি নিজেদের অবস্থানে অনড়। পালটা ইউরোপীয় দেশগুলির উদাহরণ টেনে বিজেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বহুবার ভারতের অবস্থানের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। সরাসরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রসংঘে কোনও ভোটও দেয়নি ভারত। এই আবহে সূক্ষ্ম কূটনৈতিক সুতোয় হাঁটছে ভারত। তবে তেল আমদানি নিয়ে আমেরিকার এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভারত-মার্কিন সম্পর্কে কতটা চিড় ধরে, তাই এখন দেখার।