নতুন বছরের শুরুতেই ফের একবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে বসতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের আশঙ্কা, ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনে ভারত-মার্কিন সম্পর্কে কিছু বদল আসতে পারে। বিশেষ করে ট্রাম্প যে ধরনের নীতি অবলম্বন করার বার্তা দিচ্ছেন, তাতে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্কে কিছু নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
এই বিষয়টি নিয়ে সোমবার মুখ খুলেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, বিশ্বে যতগুলি বড় অর্থনীতি রয়েছে, তাদের মধ্যে সব সময়েই দেওয়া-নেওয়ার নীতি (গিভ অ্যান্ড টেক পলিসি) চলে।
একইসঙ্গে, জয়শঙ্কর এও উল্লেখ করেছেন যে, ভারত ও আমেরিকার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আগের তুলনায় আরও গভীর হয়েছে। যা আগামী দিনে এই দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত করবে।
এই বিষয়ে জয়শঙ্কর বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্প ফেরার ফলে বিশেষ করে বাণিজ্য ক্ষেত্রে তার প্রভাব নিয়ে যথেষ্ট ভাবনা-চিন্তা করার অবকাশ রয়েছে। তাঁর মতে, এর ফলে অনেক অনিশ্চিত ঘটনা ঘটতে পারে।
সোমবার সিআইআই-এর একটি সম্মেলনে বক্তব্য পেশ করার সময় জয়শঙ্কর বলেন, 'প্রথম দফায় ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়েছিল। তার ভিত্তিতেই তাঁর দ্বিতীয় দফা নিয়ে নানা অনুমান করা হচ্ছে।...'
'...এক্ষেত্রে যদি ভারতের কথা বলতে হয়, তাহলে আমি অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলব, আমেরিকার সঙ্গে আমাদের কৌশলগত সম্পর্ক গভীর থেকে আরও গভীর হয়েছে। তারা তাদের পরিসর আগের তুলনায় অনেকটাই বাড়িয়েছে। যার ফলে ভারতের পক্ষে আরও বেশি করে যৌথ সম্ভাবনাগুলি খতিয়ে দেখার সুযোগ তৈরি হয়েছে।...'
'...এটা খুবই স্বাভাবিক যে দু'টি বৃহৎ অর্থনীতির মধ্যে সর্বদাই কিছু দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্ক থাকবে। কিন্তু, আমরা যদি অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রগুলি খতিয়ে দেখি, তাহলে দেখব, গত কয়েক বছরের মধ্যে এই সংক্রান্ত সহযোগিতাগুলি আগের তুলনায় আরও পোক্ত হয়েছে।'
জয়শঙ্করের যুক্তি, আগামী দিনে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে এমন অনেক ব্যবসায়িক বোঝাপড়া হতে পারে, যার মাধ্যমে দুই দেশই সমানভাবে উপকৃত হবে। এবং ভারতও সেই বিষয়টিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে সওয়াল করবে।
তবে, দ্বিপাক্ষিক বা যেকোনও আন্তর্জাতিক পরিসরে বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য ভারত যে কিছুতেই তার নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করবে না, তাও বুঝিয়ে দেন জয়শঙ্কর।
এক্ষেত্রে সরাসরি চিনের নাম না করলেও জয়শঙ্করের বার্তা, প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আনার ক্ষেত্রেও ভারত কঠোরভাবে নিজের নিরাপত্তা সংক্রান্ত নীতিগুলি মেনে চলবে।