আজ শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশ নিয়ে সর্বদল বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। এরপর স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই রাজ্যসভায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতি জারি করেন এস জয়শংকর। আজ সংসদে শেখ হানিসাকে নিয়ে এস জয়শংকর বলেন, 'আমরা যা বুঝেছি, তাতে নিরাপত্তা বাহিনীর আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনার পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইস্তফা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেন। খুব কম সময়ের মধ্যে উনি আপাতত ভারতে আসার অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেন। গতকাল সন্ধ্যায় উনি দিল্লিতে পৌঁছেছেন।' এদিকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আজ জয়শংকর বলেন, 'আমরা আমাদের কূটনৈতিক মিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ভারতীয়দের সাথে যোগাযোগ রেখে চলেছি।' (আরও পড়ুন: 'একসঙ্গে কাজ করব', বাংলাদেশ ইস্যুতে কেন্দ্রের সঙ্গে বিরোধের প্রশ্ন নেই জানাল TMC)
আরও পড়ুন: নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটে তাণ্ডব বাংলাদেশিদের, সরানো হল মুজিবের ছবি
আরও পড়ুন: বিদেশি শক্তি কলকাঠি নাড়তেই কি বাংলাদেশে হাসিনার পতন? জয়শংকরকে প্রশ্ন রাহুলের
সংসদে জয়ংকর বলেন, 'বাংলাদেশে বর্তমানে আনুমানিক ১৯ হাজার ভারতীয় নাগরিক রয়েছে যার মধ্যে প্রায় ৯ হাজার জন হলেন পড়ুয়া। সেদেশে থাকা বেশিরভাগ ভারতীয় শিক্ষার্থী জুলাই মাসে ফিরে এসেছে... আমরা সংখ্যালঘুদের অবস্থার বিষয়েও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। তাদের সুরক্ষা এবং মঙ্গল নিশ্চিত করার জন্য সেখানে বিভিন্ন দল এবং সংস্থা উদ্যোগ নিয়েছে বলে খবর পেয়েছি। স্বাভাবিকভাবেই, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের মতো স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন থাকব। আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে এই জটিল পরিস্থিতির ভিডিওতে ব্যতিক্রমী সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আমরা ঢাকার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।'
আরও পড়ুন: বিক্ষোভকারীদের তাণ্ডব আওয়ামি নেতার পাঁচতারা হোটেলে, পুড়ে মরল বিদেশি সহ ২১
এদিকে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরই জল্পনা তৈরি হয়েছিল, বিদেশি কোনও শক্তির হস্তক্ষেপেই কি এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে? কারণ কোটা সংরক্ষণের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের দাবি মেনে নেওয়া হয়। তবে এরপর এক দফা দাবিতে হাসিনাকে গদিচ্যুত করতে রাস্তায় নামে বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি খারাপ হয় গত রবিবার। মৃত্যু হয় শতাধিক মানুষের। আর সোমবার হাসিনাকে দেশ ছাড়তে হয়। তিনি আপাতত ভারতেই আছেন। এই আবহে আজ ভারতে সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়। সেই বৈঠকেই রাহুল গান্ধী প্রশ্ন করলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতির নেপথ্যে বিদেশি কোনও শক্তির হাত আছে কি না? বিশেষত চিনের যোগ আছে কিনা, তা জানতে চান রাহুল। জবাবে জয়শংকর নাকি বলেন, বিদেশি শক্তির হাত থাকার বিষয়টি এখন উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, বৈঠকে রাহুল গান্ধী আরও প্রশ্ন করেন যে শেখ হাসিনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে ভারত সরকারের কাছে কোনও তথ্য আছে কিনা। সেটার প্রেক্ষিতে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর জানান যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে হাসিনার সঙ্গে কথা হয়েছে। কিন্তু সেটা এখনই প্রকাশ্যে বলা যাবে না। এদিকে সরকারের পক্ষে এই বৈঠকে জয়শংকরের পাশাপশি ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজেজু সহ আরও অনেকে। এই বৈঠকেই জয়শংকর জানান, শেখ হাসিনা এর পরে কোথায় যেতে চান এবং কবে যেতে চান, তা নিয়ে তাঁকেই সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। এদিকে হাসিনাকে কোনও প্রকারের চাপ দেওয়া হবে না বলেও জানান জয়শংকর। হাসিনার পরিকল্পনা জানার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে নয়াদিল্লি।