'দেশের দাম আমাদের কোমর ভেঙে দিচ্ছে।' মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে এমনই মন্তব্য করলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর।
মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে মার্কিন বিদেশ সচিবের সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের বিদেশমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের অর্থনীতিতে মাথাপিছু আয় ২,০০০ মার্কিন ডলার। তেলের দাম নিয়ে আমাদের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এটা আমাদের বড় উদ্বেগের বিষয়।' তিনি আরও বলেন, 'চাপের মুখে আছে শক্তির বাজার। সেই চাপের বোঝা কমাতে হবে। কোনও পরিস্থিতি আমাদের এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের উপর কতটা প্রভাব ফেলে, তার ভিত্তিতে আমরা সংশ্লিষ্ট পরিস্থিতির বিবেচনা করি। কীভাবে শক্তির চাহিদা পূরণ করা হবে, তা নিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে গভীর উদ্বেগ আছে।'
আরও পড়ুন: Russian Oil: সস্তা তেল জোগাড় করা আমার কাজ,অন্যরা রাগ করতেই পারে, অকপট জয়শংকর
দ্য ইকোনমিকস টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবারের মন্তব্যের আগেই ভারতের বিদেশমন্ত্রী আক্ষেপ প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন যে ইরান এবং ভেনেজুয়েলার পর আন্তর্জাতিক বাজার থেকে রাশিয়ার তেলের অস্তিত্ব মুছে ফেলার চেষ্টা করছে। অর্থাৎ রাশিয়া থেকে কোনও দেশ যাতে তেল কিনতে না পারে, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন, নীতি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বিভিন্ন দেশ।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক আক্রমণ শুরুর পর বিশ্ব বাজারে একঘরে হয়ে গিয়েছিল রাশিয়া। সেই পরিস্থিতিতে ভারতকে একেবারে সস্তায় তেল রফতানির প্রস্তাব দিয়েছিল মস্কো। আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো দেশের রক্তচক্ষু সত্ত্বেও সেই প্রস্তাবে সায় দিয়েছিল ভারত। তার ফলে বেজিংয়ের পর রাশিয়ার দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ তেল আমদানিকারক হয়ে উঠেছিল ভারত। বিশেষত জুনে রাশিয়া থেকে তেলের আমদানি একেবারে শীর্ষে উঠেছিল। গত সপ্তাহে সংবাদসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, পরিবহণ খরচের জন্য চলতি মাসে ভারতীয় তৈল শোধনাগার সংস্থাগুলি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কিছুটা কমিয়ে আনতে পারে।
তারইমধ্যে জি-৭ সংগঠনের (জাপান, ব্রিটেন, আমেরিকা, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি এবং ইতালি) তরফে রাশিয়ার তেলের দাম উপর 'সীমা' নির্ধারণের পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ওই গোষ্ঠীর বক্তব্য, কম দামে তেল বিক্রি করে ইউক্রেনে হামলার ‘প্রিমিয়াম’ পাচ্ছে রাশিয়া। যদিও বিষয়টি থেকে দূরত্ব বজায় রাখে নয়াদিল্লি। সেই পরিস্থিতিতে ব্লিনকেনের সামনে দাঁড়িয়ে তেলের দাম নিয়ে জয়শংকর বার্তা দিয়ে আমেরিকার উপর কূটনৈতিক চাপ তৈরি করা হল বলে সংশ্লিষ্ট মহলের মত।