আপাতত দিল্লিতেই আছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সর্বদল বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন এস জয়শংকর। এই বৈঠকে বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী, তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ সব দলের নেতারা। এদিকে সরকারের পক্ষে এই বৈঠকে জয়শংকরের পাশাপশি ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজেজু সহ আরও অনেকে। এই বৈঠকেই জয়শংকর জানান, শেখ হাসিনা এর পরে কোথায় যেতে চান এবং কবে যেতে চান, তা নিয়ে তাঁকেই সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। এদিকে হাসিনাকে কোনও প্রকারের চাপ দেওয়া হবে না বলেও জানান জয়শংকর। হাসিনার পরিকল্পনা জানার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে নয়াদিল্লি। (আরও পড়ুন: হাসিনার বিদায়ে 'খুশি' USA, নীরব সোমের অরাজকতা নিয়ে, UN তদন্তের দাবি ব্রিটেনের)
আরও পড়ুন: 'অস্থিতিশীল বাংলাদেশ আগ্নেয়গিরি… প্রভাব পড়বে পশ্চিমবঙ্গে', বললেন 'সম্ভাব্য' PM
এদিকে বাংলাদেশে হিংসা শুরুর পর থেকেই কয়েক হাজার ভারতীয় সেদেশ থেকে ফিরেছেন নিজ দেশে। প্রথম দফায় দেশে ফেরা ভারতীয়দের বেশিরভাগই ছিলেন শিক্ষার্থী। তবে আজকের বৈঠকে জয়শংকর জানালেন, এখনও বাংলাদেশের পরিস্থিতি এমন বাজে নয় যে সরকারকে হস্তক্ষেপ করে ভারতীয় নাগরিকদের উদ্ধার করতে হবে। এদিকে বৈঠকে কেন্দ্রের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে নয়াদিল্লি। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৩ হাজার ভারতীয় আছেন বলে বৈঠকে জানান জয়শংকর।
আরও পড়ুন: গণভবন থেকে চুরি 'হাসিনার অন্তর্বাস', সংসদ থেকে নগদ টাকা চুরি 'আন্দোলনকারীদের'
এই সবের মাঝেই রাহুল গান্ধী বৈঠকে প্রশ্ন করেছিলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতির নেপথ্যে কোনও বিদেশি শক্তির হাত রয়েছে কি না? সেই বিষয়ে জয়শংকর জানান, বাংলাদেশে সরকারের পতনের নেপথ্যে বিদেশি শক্তির হাত থাকার বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে এখনও এই বিষয়ে পোক্ত কোনও প্রমাণ হাতে এসে পৌঁছয়নি বলেও জানান জয়শংকর।
এদিকে গতকাল পদত্যাগ করার কিছুক্ষণ পরই বাংলাদেশ থেকে উড়ে দিল্লির কাছে হিন্ডন বিমান ঘাঁটিতে এসে পৌঁছেছিলেন সেদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁকে এই দেশে নিয়ে এসেছিল বাংলাদেশি বায়ুসেনার একটি সি-১৩০জে বিমান। সেই বিমানটি আজ সকালে ফের আকাশে উড়ে যায় বলে জানা গিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ সকাল ৯টার সময় বিমানটি আকাশে উড়ে যায়। তবে সেই বিমানে হাসিনা ছিলেন না বলেই জানা গিয়েছে। সেই বিমানে ছিলেন ৭ জন বাংলাদেশি সেনাকর্মী।
এদিকে শেখ হাসিনা কি ভারতেই রাজনৈতিক আশ্রয় নেবেন নাকি ব্রিটেনে যাবেন? এই নিয়ে চরম জল্পনা চলছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, হিন্ডন থেকে বাংলাদেশি বায়ুসেনার বিমানটি আকাশে ওড়ার পর থেকেই পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে চলেছে ভারতের নিরাপত্তা সংস্থা এবং গোয়েন্দারা। এই পরিস্থিতিতে হাসিনার পরবর্তী গন্তব্য ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে। এদিকে হাসিনার ছেলে ওয়াজেদ সজীব ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর মা আর বাংলাদেশে ফিরবেন না। রাজনীতিতে যোগ দেবেন না। এদিকে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল হাসিনার সঙ্গে দেখা করে যান গতকাল। এই অবস্থায় ফিরে গিয়ে অজিত ডোভাল নিজের রিপোর্ট জমা দেন প্রধানমন্ত্রী মোদীকে। গতকাল রাতেই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ক্যাবিনেটের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের ডাক দেন মোদী। সেখানে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা হয়। আর আজ সকালে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর সর্বদল বৈঠকের ডাক দেন বাংলাদেশ নিয়ে।