সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ফের একবার নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। শনিবার তিনি আরও একবার সরাসরি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জঙ্গি কার্যকলাপে মদত দেওয়ার অভিযোগ করেন।
জয়শঙ্কর এই প্রসঙ্গে বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে এখনও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হচ্ছে না। তার প্রধান কারণ হল, পাকিস্তান এখনও সীমান্তের ওপার থেকে এপারে সন্ত্রাসবাাদী কার্যকলাপ ঘটাচ্ছে, তাতে সরাসরি মদত দিচ্ছে।
এদিন মুম্বইয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের ম়ঞ্চে বক্তৃতা করেন জয়শঙ্কর। সেখানেই তিনি বলেন, আঞ্চলিক সম্পর্ক যাতে সুষ্ঠু থাকে, তা নিশ্চিত করতে ভারত লাগাতার কাজ করে চলেছে। কিন্তু, তাতে সবসময় খুব একটা লাভ হচ্ছে না। দেশভাগের পর থেকেই এমনটা চলছে।
জয়শঙ্কর এই প্রসঙ্গে বলেন, 'দেশভাগের পর থেকেই এই অঞ্চলের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করতে ভারতকে নানা প্রতিকূলতার মুখে পড়তে হয়েছে। তবুও ভারত অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে সেই কাজ করে গিয়েছে। বদলে ভারত কোনও প্রত্য়াশাও করেনি।...'
'ভারত নানা ধরনের উন্নয়নে পড়শিদের আর্থিক তহবিল প্রদান করে সহযোগিতা করেছে। শক্তি সম্পদ উৎপাদন, সড়ক ও রেল যোগাযোগ গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। বাণিজ্য়ের সম্প্রসারণ ঘটিয়েছে। আর্থিক বিনিয়োগ করেছে, মুদ্রা বিনিময় করেছে।...'
এক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কার প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, 'বিপদের দিনে সর্বক্ষণ আয়তনে ক্ষুদ্র প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির পাশে থেকেছে ভারত। ২০২৩ সালে পড়শি শ্রীলঙ্কাও সেটা দেখেছে। এই দুই দেশের মধ্যে ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থমূল্যের কাজ হয়েছে।...'
এরপর আরও এক পড়শি বাংলাদেশ প্রসঙ্গে জয়শঙ্কর বলেন, 'রাজনৈতিক কারণে বর্তমানে বাংলাদেশে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। দুই দেশের স্বার্থই যাতে রক্ষিত হয়, সেটা সর্বাগ্রে নিশ্চিত করতে হবে।'
এরপরই পাকিস্তানকে নিয়ে চরম হতাশা প্রকাশ করেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রী। তিনি বলেন, 'যদি সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার কথা বলেন, তাহলে বলতেই হবে, পাকিস্তান আজও ব্যতিক্রমই থেকে গিয়েছে। এবং সেই ক্যান্সার এবার তার নিজের দেশকেই গিলে খাচ্ছে। আর সেই কারণেই পুরো মহাদেশই পাকিস্তানকে একইভাবে এড়িয়ে চলছে।'
অন্যদিকে, চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কেমন, তা নিয়ে জয়শঙ্কর মোটামুটি আশার বাণীই শোনান। তিনি বলেন, '২০২০ সালের সীমান্ত সংঘাতের পর চিনের সঙ্গে সম্পর্কে যে অবনতি হতে শুরু করেছিল, সেটা কাটিয়ে ওঠার আপ্রাণ চেষ্টা চলছে। তবে এ নিয়ে আরও কাজ করা দরকার। বিশেষ করে আমাদের সম্পর্ককে দীর্ঘমেয়াদী করতে হলে সেটা প্রয়োজন।'