চলতি বছর গড়ে ৯.৪ শতাংশ বেতন বাড়তে পারে ভারতীয় কর্মীদের। এমনই জানানো হল হিউম্যান রিসোর্স (HR) উপদেষ্টা সংস্থা মার্সার 'টোটাস রেমুনারেশন সার্ভে'-তে (মোট পারিশ্রমিক সমীক্ষা)। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে ভারতে বেতন বৃদ্ধির গ্রাফটা উপরের দিকে উঠেছে। ২০২০ সালে সমস্ত ক্ষেত্র মিলিয়ে গড়ে আট শতাংশ বেড়েছিল বেতন। যা এবার ৯.৪ শতাংশে পৌঁছে যেতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে। যা আর্থিক বৃদ্ধি এবং দক্ষ কর্মচারীর চাহিদা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে জানানো হয়েছে ওই রিপোর্টে।
গাড়ি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং- কোন ক্ষেত্রে কত বেতন বাড়তে পারে?
ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, অটোমোবাইল ক্ষেত্রে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের হাসি এবার চওড়া হতে পারে। বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের 'মেক ইন ইন্ডিয়া' প্রকল্পের উপরে ভর করে চলতি বছর অটোমোবাইল ক্ষেত্রের কর্মচারীদের গড়ে ১০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। যা আগে ছিল ৮.৮ শতাংশ।
ইঞ্জিনিয়ারিং এবং উৎপাদন ক্ষেত্রের কর্মরতদেরও ‘ইনক্রিমেন্ট’ (বেতন বৃদ্ধি) নেহাত মন্দ হবে না বলে ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রের কর্মচারীদের গড়ে বেতন বাড়তে পারে ৯.৭ শতাংশ। আর উৎপাদন ক্ষেত্রে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের গড়ে আট শতাংশ বেতন বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। যা উৎপাদন ক্ষেত্রে পুনরুত্থানের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে ওই জানানো হয়েছে রিপোর্টে।
প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজার!
শুধু তাই নয়, ২০২৫ সালে কর্মচারীর সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে দেশের ৩৭ শতাংশ সংস্থা। সার্বিকভাবে 'ভলান্টিয়ারি অ্যান্ট্রিশন' (কর্মচারীরা নিজেরাই চাকরি ছেড়ে দেন) থাকতে পারে ১১.৯ শতাংশের মতো। সেক্ষেত্রে শীর্ষে থাকতে পারে কৃষি এবং রাসায়নিক ক্ষেত্র (১৩.৬ শতাংশ)। অর্থাৎ বাজারে প্রতিযোগিতা চলবে বলে ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছরে বিভিন্ন সংস্থা কৌশলগতভ নিয়োগের উপরে জোর দেবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
চাকরির দুনিয়ায় আসছে পরিবর্তন
বিষয়টি নিয়ে মার্সার ভারতীয় শাখার কেরিয়ারস লিডার মানসী সিংঘল জানিয়েছেন, ভারতের প্রতিভা এবং দক্ষতার দুনিয়ায় অভাবনীয় পরিবর্তন এসেছে। সাধারণত যে বেতন দেওয়া হত, তার থেকে বেশি টাকা প্রদানের বিষয়টিও নয়া ধারার সূচনা করছে। সেইসঙ্গে ৭৫ শতাংশের বেশি সংস্থা যে 'পারফরম্যান্স-লিঙ্কড পে প্ল্যান'-র পথে হেঁটেছে, সেটাও আমূল পরিবর্তন আনছে চাকরির বাজারে। অর্থাৎ স্বল্প মেয়াদের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি ক্ষেত্রেও কতটা ভালো কাজ করা হয়েছে, সেটার ভিত্তিতে বেতন নির্ধারণের দিকে এগিয়ে যাওয়া হচ্ছে।