সাধারণত আমরা অনেকেই নিজেদের বেতন নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা করতে স্বচ্ছন্দ্য করি না। তবে সম্প্রতি উল্টো ট্রেন্ড দেখা গিয়েছে। দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা ট্যাবু ভেঙে যুব সমাজ নিজেদের বেতন অনলাইনে খোলাখুলিভাবে শেয়ার করছে। তবে এতে কিছুটা ক্ষুণ্ণ হয়েছেন সংস্থার নিয়োগকর্তার। কারণ তাদের মধ্যে অনেকেই নিজের সংস্থার বেতন কাঠামো প্রকাশ্যে আনতে পছন্দ করে না।
তবে এই গোটা বিষয়টার সূচনা হয়েছে একজনের টিকটকারের ভিডিয়ো থেকে। হান্নাহ উইলিয়ামস নামের ওই টিকটকারের রাস্তায় যাঁর সঙ্গেই দেখা হয় তাঁকে একটাই প্রশ্ন করেন। 'আপনার আয় কত?' বিবিসি-র প্রতিবেদন অনুসারে, উইলিয়ামসের মাঝে উপলব্ধি হয়ে তাঁর নিয়োগকারী সংস্থা তাঁকে কম বেতন দিচ্ছে। তারপরই তিনি টিকটকে ভিডিয়ো বানাতে শুরু করেন। তিনি সেখানে তাঁর পেশাগত উন্নয়ন নিয়ে কথা বলা শুরু করেন। তিনি সেই ভিডিয়োতে বলেন, তাঁর ফলোয়ার্সরা বেতন নিয়ে তাঁর সততার প্রশংসা করেছেন।
প্রসঙ্গত, অনেক সংস্থা বিশ্বাস করে যে আবেদনকারীরা যারা একটি ভাল উপার্জনের জন্য চাকরি পরিবর্তন করেন তাঁরা অদূরদর্শী। যদিও অনেকেই বেশি উপার্জনের জন্য চাকরি পরিবর্তন করে থাকেন। তবে ভারতে এইচআর ম্যানেজারদের একজন প্রার্থীকে তাঁদের আগের সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত বেতন প্রকাশ করতে বলা উচিত এবং সেই বেতনের পরিপূরক একটি বেতন প্যাকেজ দেওয়া উচিত কিনা তা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে।
জার্মানিতে কোনও সংস্থার তরফে কোনও আবেদনকারীর তাঁর পূর্ববর্তী অফিসের বেতন কাঠমো জিজ্ঞাসা নিষিদ্ধ। এই একই নিয়ম রয়েছে আমেরিকাতেও। সেখানে আবেদনকারী স্বেচ্ছায় তাঁর আগের সংস্থায় প্রাপ্ত বেতন না জানাতে চাইলে তাকে জোর করা বেআইনি। তবে বেতন জানার এই ট্রেন্ড দেখা গিয়েছে বৈষম্য দূর করার জন্য। যাতে লিঙ্গভেদে একই কাজের জন্য দুটো আলাদা বেতন কাঠামো না হয় তার জন্যই এই পদক্ষেপ। আমেরিকার মধ্যে প্রথম স্টেট ক্যালিফোর্নিয়া গত ২৭ সেপ্টেম্বর একটি নির্দেশিকা জারি করে। সেখানে ১৫ জনের বেশি কর্মী রয়েছে এমন সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে তাঁদের বেতন কাঠামো প্রকাশ করার ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা আনা হয়েছে। তবে শুধুমাত্র এই প্রশ্ন উইলিয়ামসই তোলেনি। এরকম প্রচুর ভাইরাল টুইট, মিম ও টিকটক অ্যাকাউন্ট রয়েছে যার মাধ্যমে যুব সমাজ বেতনে স্বচ্ছতা আনার দাবি জানিয়েছে।