হামাসকে তালিবানের সঙ্গে তুলনা করেছেন সলমন রুশদি। এই ভারতীয়-ব্রিটিশ-আমেরিকান লেখক ইজরায়েলের সঙ্গে প্যালেস্টাইন জঙ্গি সংগঠন হামাসের যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে এমনটাই মন্তব্য করেছেন। প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক এবং নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সলমন রুশদি মুক্ত প্যালেস্টাইনের দাবিতে মার্কিন ক্যাম্পাসের বিক্ষোভকারীদের কঠোর সমালোচনা করেছেন। সলমন রুশদি বলেছেন, আমেরিকাসহ সারা বিশ্বের ছাত্র-যুবকরা যেভাবে হামাসকে সমর্থন করছে তা সত্যিই উদ্বেগজনক।
সলমন রুশদি কী বলছেন
রুশদি বলেছেন যে 'মুক্ত' প্যালেস্তাইন অনেকটা 'তালিবানের মতো' এবং শীঘ্রই ইরানের 'ক্লায়েন্ট' হয়ে উঠবে। জার্মান আরবিবি-র সঙ্গে কথা বলার সময়, তিনি আরও বলেছিলেন যে গাজায় যেভাবে এত লোককে হত্যা করা হচ্ছে তা দেখলে যে কোনও ব্যক্তি বিরক্ত বোধ করবেন, ব্যথিত হবেন। রুশদির দাবি, আমি চাই যে প্রতিবাদকারী লোকেরা হামাসকেও উল্লেখ করুক কারণ সেখান থেকেই এই যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। হামাস একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। এটা আশ্চর্যজনক যে তরুণ, প্রগতিশীল ছাত্ররা শুধুমাত্র রাজনীতি করার জন্য একটি ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সমর্থন করছে। তারা প্যালেস্টাইনকে মুক্ত করার কথা বলছে।
প্যালেস্টাইন সমর্থকদের প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, 'এটাই কি পশ্চিমা বামদের প্রগতিশীল আন্দোলনের উদ্দেশ্য? আরও একটি তালিবান আনা? মধ্যপ্রাচ্যে ইজরায়েলের ঠিক পাশে আরেকটি আয়াতুল্লাহ-সদৃশ রাষ্ট্র?' রুশদি আরও বলেছেন যে তিনি গাজায় মৃত্যুর বিষয়ে সংবেদনশীল, কিন্তু যখন প্যালেস্টাইনের সমর্থকরা ইহুদি বিরোধী এবং কখনও কখনও হামাসের প্রকৃত সমর্থনের দিকে অগ্রসর হয়েছে, তখন এটি খুবই সমস্যার বিষয়।
প্রকৃতপক্ষে রুশদি এমনই একজন যিনি ১৯৮০ এর দশক থেকে জীবনের বেশিরভাগ সময় প্যালেস্টাইনের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে এসেছেন। সেখানে দাঁড়িয়ে রুশদির এমন বক্তব্য চর্চায় উঠে এসেছে। রুশদির মন্তব্যের এই ভিডিয়ো ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায়ও ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ইজরায়েলের অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্ট এবং কূটনীতিক ডেভিড সারাঙ্গার অ্যাকাউন্ট।
স্বাভাবিকভাবেই রুশদির মন্তব্য বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, বিশেষ করে বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবের সঙ্গে ছাত্র বিক্ষোভের সারিবদ্ধতা সম্পর্কে অনেকেই শেয়ার করেছেন মতামত। একজন লিখেছেন, সলমন রুশদি এবং জাডি স্মিথের মতো সাংস্কৃতিক অভিজাতদের পশ্চিমা উদার আধিপত্যবাদী বিশ্বব্যবস্থাকে রক্ষা করতে হবে। তাঁরাই সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যের কাঠামোর অংশ।
প্রসঙ্গত, রুশদির বই দ্য স্যাটানিক ভার্সেসে ব্লাসফেমির অভিযোগে ১৯৮৯ সালে ইরানের তৎকালীন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি তাঁকে হত্যার ফতোয়া দিয়েছিলেন। এরপর থেকেই জীবনের ঝুঁকিতে রয়েছেন সলমন রুশদি। ২০২২ সালে, একজন ব্যক্তি তাঁর উপর মারাত্মক আক্রমণও করেছিলেন যাতে তিনি তাঁর এক চোখ হারিয়েছিলেন।