উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, বাংলাদেশে এখন যা ঘটছে তা অযোধ্যা ও সম্ভলে মুঘল শাসক বাবরের সেনাবাহিনী যা করেছিল, বাংলাদেশেও এখন একই ঘটনা ঘটছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমস সূত্রে।
অযোধ্যায় ৪৩তম রামায়ণ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ভগবান রাম গোটা সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।
আমরা যদি ঐক্যকে গুরুত্ব দিতাম এবং জাতির শত্রুদের কৌশলকে সামাজিক বিদ্বেষ সৃষ্টিতে সফল হতে না দিতাম তাহলে এই দেশ কখনোই দাস হতো না। আমাদের তীর্থযাত্রা অপবিত্র হত না। মুষ্টিমেয় কিছু আক্রমণকারী আমাদের আক্রমণ করার সাহস পেত না এবং ভারতের সাহসী সৈন্যদের দ্বারা পিষ্ট হত। বলেন তিনি।
যোগী বলেন, যারা সমাজের মধ্যে প্রতিকূলতা তৈরি করেছিল তারা সফল হতে পেরেছে এবং তাদের জিন আজও একই রয়েছে। বিরোধীদের কটাক্ষ করে তিনি বলেন, যাঁরা জাতপাতের রাজনীতি করে সামাজিক কাঠামো ভেঙে দিচ্ছেন, তাঁরাই এখনও সক্রিয়।
'... ৫০০ বছর আগে বাবরের এক সেনাপতি অযোধ্যায় কিছু কাজ করেছিলেন, সম্ভলে অনুরূপ কাজ করেছিলেন এবং আজ বাংলাদেশে যা ঘটছে। তিনজনের স্বভাব ও ডিএনএ একই।
তিনি বলেন, কেউ যদি এর অন্যথা বিশ্বাস করে তাহলে তারা ভুল করছে।
তিনি বলেন, 'বিভেদকামী উপাদানগুলি ইতিমধ্যেই সেখানে রয়েছে, সামাজিক বুনন ভেঙে ফেলছে, সামাজিক ঐক্য ভেঙে ফেলছে এবং 'আপকো কাটনে অউর কাটওয়ানে কা' পূর্ণ ব্যবস্থা করছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এমন অনেক বিভেদকামী শক্তি সারা বিশ্বে সম্পত্তি কিনেছেন। তিনি বলেন, ভারতে যখন কোনো সংকট দেখা দেয়, তখন ওই বাহিনী অন্য দেশে পালিয়ে যায় এবং এখানকার নাগরিকদের 'কষ্ট ও মরার' জন্য ফেলে রাখে।
যদিও মুখ্যমন্ত্রী যোগীর এই মন্তব্যে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস সাংসদ তারিক আনোয়ার বলেন, একজন মুখ্যমন্ত্রী এমন ভাষায় কথা বলতে পারেন না। বিজেপির এমন বর্ষীয়ান নেতা এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে সমাজকে বিভক্ত করার জন্য এমন ভাষায় কথা বলতে দেখে অবাক লাগছে।
গত মাসে আদালতের নির্দেশে স্থানীয় একটি মসজিদে সমীক্ষা চালাতে গিয়ে হিংসায় জড়িয়ে পড়ে সম্ভল। এই ঘটনায় চারজন মুসলিম ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (এএসআই) সমীক্ষার সূত্রপাত হয় স্থানীয় আদালতে দায়ের করা একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, যেখানে দাবি করা হয়েছিল যে মসজিদটি মূলত একটি হরিহর মন্দিরের জায়গায় নির্মিত হয়েছিল।
সম্ভলের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাজেন্দ্র পেনসিয়া জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ৪০০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ৩২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অগস্টে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি চলছে। গ্রেফতার করা হয়েছিল সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। তাঁকে মুক্তির দাবিতে ঢাকায় বিক্ষোভ হয়েছিল।
দেশদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে।
(পিটিআই ইনপুট সহ)