বিজয় দিবসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সোশ্যাল মিডিয়া বার্তায় জ্বলে পুড়ে গেল বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভারতীয় সেনা ও বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল পাকিস্তানের ৯৩ হাজার সেনা। সেই নিয়ে গতকাল একটি টুইট করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তবে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সেই বার্তা হজম করতে পারছেন না বাংলাদেশিরা। আর এরই মাঝে বাংলাদেশের ছাত্রনেতা সারজিস আলমের গলায় শোনা গেল মোদীর প্রতি শ্লেষ। (আরও পড়ুন: আওয়ামি লিগকে 'অগণতান্ত্রিক' ভাবে মুছে ফেলতে ছক বাংলাদেশে? ভোট নিয়ে উঠছে প্রশ্ন)
আরও পড়ুন: ফের বন্দুকবাজের হামলায় রক্তাক্ত মার্কিন মুলুক স্কুল, মৃত অন্তত ৫, চলছে তদন্ত
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, 'এটা কোনও গুজরাট নয়, এটা বাংলাদেশ। এখানে উগ্র সাম্প্রদায়িকতা চলে না। এখানে গুজব ছড়িয়ে, মানুষ হত্যা করে ক্ষমতায় যাওয়া যায় না। বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বের সম্পর্ক হতে হবে সম্মানের, সমতার।' এদিকে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেনও বিজয় দিবসে মোদীর টুইটের নিন্দা জানান এবং প্রতিবাদ করেন। সারজিস আলম আরও বলেন, 'একাত্তরে পারিবারিক মুজিববাদ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বপ্ন বিসর্জন দিয়েছিলেন শেখ মুজিব। মুজিববাদ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে ভারতের কাছে লিজ দিয়েছিলেন তিনি। মুজিববাদ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে গত ১৬ বছরে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের নাগরিকদের হয় দালাল বানিয়েছেন, না হয় দাস বানিয়েছেন।'
এর আগে গতকাল নিজের সোশ্যাল মিডিয়া বার্তায় কী লিখেছিলেন নরেন্দ্র মোদী? প্রধানমন্ত্রী লিখেছিলেন, 'আজ বিজয় দিবসে, ১৯৭১ সালে ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়ে অবদান রাখা সাহসী জওয়ানদের সাহস ও আত্মত্যাগকে আমরা সম্মান জানাই। তাঁদের নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ ও অটল সংকল্প আমাদের জাতিকে রক্ষা করেছে এবং আমাদের গৌরব এনে দিয়েছে। এই দিনটি তাঁদের বীরত্ব ও অদম্য চেতনার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি। তাঁদের আত্মত্যাগ প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে এবং আমাদের দেশের ইতিহাসে গভীরভাবে গেঁথে থাকবে।'
এদিকে মোদীর এই বক্তব্যের নিন্দা জানান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহও। হাসনাত নিজের সোশ্যাল মিডিয়া বার্তায় এই নিয়ে লিখেছেন, 'এটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। কিন্তু মোদি দাবি করেছে, এটি শুধু ভারতের যুদ্ধ এবং তাদের অর্জন। তাদের বক্তব্যে বাংলাদেশের অস্তিত্বই উপেক্ষিত। ‘যখন এই স্বাধীনতাকে ভারত নিজেদের অর্জন হিসেবে দাবি করে, তখন আমি একে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতার প্রতি সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখি। ভারতের এই হুমকির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চালিয়ে যাওয়া অবশ্যম্ভাবী। এই লড়াই আমাদের চালিয়ে যেতেই হবে।'