দিওয়ালিতে আতসবাজি পোড়ানোর উপর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কেন সেই নির্দেশ কার্যকর করা হল না? সোমবার দিল্লি সরকার ও দিল্লি পুলিশের কাছে এই প্রশ্নের জবাবদিহি চাইল সুপ্রিম কোর্ট।
আদালত এই ইস্যুতে সংশ্লিষ্ট দুই পক্ষের কাছেই তাদের বক্তব্য জানতে চেয়েছে। কারণ, আদালতের একের পর এক হস্তক্ষেপের পরও রাজধানী দিল্লিতে বায়ু দূষণ এখনও বাগে আনা যায়নি।
শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন, যদি আতসবাজি পোড়ানোর উপর যে নিষাধাজ্ঞা কার্যকর করতে দিল্লি সরকার ও দিল্লি পুলিশ ব্যর্থ হয়, তাহলে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা তারা কীভাবে রুখবে?
সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এই প্রসঙ্গে বলে, 'দিল্লিতে যাঁরা আইন অমান্য করে আতসবাজি পোড়াবেন, তাঁদের বাড়ি সিল করে দেওয়ার মতো কঠোর কিছু পদক্ষেপ করতে হবে।'
সুপ্রিম কোর্টের কড়া নির্দেশ, 'আদালত যে আতসবাজি পোড়ানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, আগামী বছরের দিওয়ালিতেও সেই নির্দেশ অমান্য করা হোক, এটা আমরা দেখতে চাই না।'
দিল্লি সরকারের প্রতি আদালতের বার্তা, রাজধানী শহরে কেবলমাত্র দিওয়ালির সময়েই আতজবাজির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলে হবে না। কীভাবে এর ব্যপ্তি ঘটানো যায়, তাও দেখতে হবে।
অন্যদিকে, 'সেন্টার ফর সায়েন্স অ্য়ান্ড এনভায়রোমেন্ট'-এর তরফে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, দিওয়ালির সময় পঞ্জাব ও হরিয়ানায় চাষের জমিতে ফসল পোড়ানোর ঘটনা বেড়েছে।
এমনটা কীভাবে ঘটল, সংশ্লিষ্ট দুই রাজ্যের কাছে তারও জবাবদিহি তলব করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, যাদের-যাদের এই মামলায় বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে, তাদের প্রত্যেককে এক সপ্তাহের মধ্যে নিজেদের হলফনামা আদালতে জমা দিতে হবে। মামলা পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ১৪ নভেম্বর।
উল্লেখ্য, নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও এবারের দিওয়ালিতে দিল্লি শহরে ব্যাপক পরিমাণে আতসবাজি পোড়ানো হয় বলে অভিযোগ। যার জেরে দিওয়ালির ঠিক পরের দিন সকালেই দিল্লি ঘন ধোঁয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে।
রাজধানীর এহেন পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টে কঠোর পর্যবেক্ষণ ও অবস্থান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, দিওয়ালির পরদিন - অর্থাৎ - গত ১ নভেম্বর দিল্লিতে বায়ুর গুণমান সূচক আরও বেড়ে যাওয়ায় বায়ুর মান 'গুরুতর' পর্যায়ে নেমে যায়। দাবি করা হচ্ছে, বাতাসে ভাসমান ক্ষতিকর উপদান এই সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু-এর কাঙ্ক্ষিত মানদণ্ডের তুলনায় সাত গুন বেশি ছিল।
প্রসঙ্গত, প্রতি বছরই এই সময়টায় দিল্লিতে বায়ূ দূষণের মাত্রা বাড়ে এবং তার জন্য আশপাশের এলাকার কৃষকদের ফসলের খড় পোড়ানোর অভ্যাসকেই দায়ী করা হয়ে। দিওয়ালির আতসবাজি সেই পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে।